‘দুয়ারে সরকার’, ও ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচির ত্রিস্তরীয় টাস্কফোর্স গঠন রাজ্যব্যাপী
‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) ও ‘পাড়ায় সমাধান’ (Paray Samadhan) কর্মসূচিকে স্থায়ী চেহারা দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এখন থেকে বছরে দু’বার করে হবে প্রকল্প দু’টির কাজ। প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে আগস্টে। দ্বিতীয়টি নভেম্বর-ডিসেম্বরে।
রাজ্যব্যাপী ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচির জন্য ত্রিস্তরীয় টাস্কফোর্স (Task Force) গঠন করা হয়েছে। মুখ্যসচিবকে মাথায় রেখে স্টেট লেভেল অ্যাপেক্স কমিটি গড়া হয়েছে। এই টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ দপ্তরের প্রধান সচিব। তাঁরা ছাড়াও ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বা প্রধানসচিবরা এই কমিটির সদস্য। প্রয়োজনে বাইরে থাকা দপ্তরগুলির প্রধান আমলাদেরও কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার অবকাশ থাকছে। এছাড়াও জেলা ও ব্লকস্তরে আরও দু’টি করে টাস্কফোর্স তৈরি করা হয়েছে। জেলাস্তরে কমিটির চেয়ারপার্সন করা হয়েছে জেলাশাসককে।
ব্লকস্তরের কমিটির চেয়ারপার্সন হবেন বিডিওরা। গত ২৭ জুলাই মুখ্যসচিব এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছেন। ১৬ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। এই শিবিরে ১৫টি সরকারি স্কিমে আবেদন করা যাবে। প্রতিটির জন্য পৃথক টেবিল থাকবে।
‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে রূপায়ণ করতে মুখ্যসচিবের নির্দেশিকা জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০২০-’২১ সালে ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে। যে কারণে প্রতি বছর দু’বার এই কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক ওই শিবির হবে। গোটা কর্মসূচির রূপায়ণ এবং নজরদারির জন্য রাজ্য, জেলা ও ব্লকস্তরে ত্রিস্তরীয় টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। রাজ্যস্তরের কমিটিতে বিভিন্ন দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব ও সচিবরা আছেন। জেলাস্তরের টাস্ক ফোর্স কমিটিতে পুলিস কমিশনার বা পুলিস সুপার, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, প্রতিটি দপ্তরের নোডাল অফিসার, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতিক আধিকারিক প্রমুখ থাকবেন। ব্লকস্তরের কমিটিতে রাখা হয়েছে থানার আইসি বা ওসি, বিভিন্ন দপ্তরের ব্লকস্তরের অফিসার ও ব্লকের এক্সটেনশন অফিসারদের।
জানা গিয়েছে, এবার বেশ কয়েকটি নতুন পরিষেবার সুযোগ মিলবে এখানে। এবার মানুষের দরজায় প্রশাসনকে নিয়ে গিয়ে যাবতীয় সরকারি পরিষেবা দান এবং সমস্যার সমাধান করার এই কর্মসূচি চলবে অন্তত দেড় মাস ধরে। ১৬ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবির চলবে। আবেদনগুলি খতিয়ে দেখা হবে ৮ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর। ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর আবেদনকারীদের হাতে শংসাপত্র ও পরিষেবা দেওয়া হবে। একইভাবে ১৬ থেকে ৩১ আগস্ট ‘পাড়ায় সমাধানের’ও শিবিরও চলবে। যে সব কাজের তালিকা জমা পড়বে, তা নিয়ে প্রজেক্ট শুরু হবে ১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ১-৮ অক্টোবর বেরবে ওয়ার্ক অর্ডার, তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের সূচনা হবে। এবার খাদ্যসাথী, ডিজিটাল রেশন কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী, কাস্ট সার্টিফিকেট, শিক্ষাশ্রী, তফসিলি বন্ধু, জয় জোহার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, মানবিক, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষকবন্ধু (নিউ), একশো দিনের কাজ, স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড, ঐক্যশ্রী, ব্যাঙ্কিং বিষয়ক সমস্যা, আধার কার্ড, জমির রেকর্ড সংশোধন ও সামাজিক সুরক্ষা যোজনা নিয়ে আবেদন করা যাবে।
এর আগে গত বছর ১ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যব্যাপী তিন দফায় ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবির হয়েছে। সেবার স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করানোর ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সাড়া পড়েছিল। এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে ক্যাম্পে ক্যাম্পে ব্যাপক সাড়া পড়বে বলে সরকারি অফিসাররা মনে করছেন। পাশাপাশি স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের জন্যও আবেদন জমা পড়ার সম্ভাবনা।