দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

ডিভিসি জল ছাড়াই প্লাবিত দক্ষিণবঙ্গ

August 1, 2021 | 2 min read

টানা বৃষ্টি ও ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার জের। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক আকার নিচ্ছে। শুক্রবারের পর শনিবারও প্রায় এক লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (DVC) মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে। রাতে আরও জল ছাড়া হতে পারে। ফলে ইতিমধ্যে প্লাবিত বেশ কিছু এলাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা। নতুন করে বহু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়ার বিস্তীর্ণ অংশ ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন বলে জানিয়েছে নবান্ন। কংসাবতী ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকা। শিলাবতী নদী ফুলেফেঁপে ওঠায় ঘাটালের পরিস্থিতিও খারাপ হচ্ছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এদিন দুপুরে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। নবান্ন সূত্রে খবর, দুর্গাপুর, আসানসোল, ঝাড়খণ্ডে প্রচুর বৃষ্টিপাত (Heavy Rain) হওয়ায় তেনুঘাট, পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধারের উপর চাপ অনেক বেড়ে গিয়েছে। আবার রাজ্যের বেশিরভাগ নদীর জলধারণ ক্ষমতা এখন কার্যত শেষ সীমায়। তাই সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে জেলাশাসকদের। এখনও পর্যন্ত সাত-আটটি জেলা থেকে মোট ৩৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার।বন্যার ভ্রুকুটি দেখা দিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের ছ’টি ব্লকে। জামালপুর, খণ্ডঘোষ, রায়না-১ ও ২, গলসি-১ ও ২ ব্লকে মাইকিং শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। সেখানে ইতিমধ্যে ১০২টি গ্রাম জলমগ্ন। বর্ধমান-২ নম্বর ব্লকের পুতুণ্ড গ্রামে বাঁকা নদের বাঁধের দু’টি জায়গা ভেঙে জল ঢুকছে এলাকায়। বাঁকুড়ার সোনামুখী, পাত্রসায়র ও ইন্দাসে নদ উপচে বানভাসী একাধিক গ্রাম। সোনামুখীর কেনেটিতে বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। হুগলির জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাট ১ এবং রসিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চারটি গ্রামে জল ঢুকেছে শনিবার। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ছাড়া জল আজ, রবিবার সকালের মধ্যে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বিস্তীর্ণ অংশ ভাসাতে পারে বলেও আশঙ্কা। প্রবল বৃষ্টিতে এমনিতে এসব এলাকার মাঠ, ঘাট, খাল-বিল ভরে রয়েছে। দামোদরের জল বাঁধ উপচে ঢুকতে শুরু করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন। প্লাবিত হতে পারে রামপুর, ডিহিভুরসুট, আসন্ডা, কুরচি-শিবপুর ইত্যাদি অঞ্চল। এসব এলাকায় ১৯টি ত্রাণ শিবির খুলেছে জেলা প্রশাসন। তবে ডিভিসির এক পদস্থ কর্তা জানান, ‘শুক্রবার থেকেই বৃষ্টির দাপট কমে এসেছে। শনিবার একেবারে বৃষ্টি না হওয়ায় সব জায়গাতেই বাঁধ বা ব্যারেজের উপর চাপ কমবে।’ ডিভিসি সব ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকারকে জানিয়ে আলোচনার ভিত্তিতেই জল ছাড়ছে বলে দাবি তাঁর।

কংসাবতী ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ায় পাঁশকুড়ায় বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নদী। শনিবারই দু’ধাপে প্রায় ২৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। গোবিন্দনগর পঞ্চায়েতের নছিপুর এলাকায় নদীবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তা মেরামত করা হয়। এদিন বৃষ্টি না হলেও পুরুলিয়ার একাধিক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে কুমারী নদীর উপর নির্মীয়মাণ সেতুর উপর দিয়ে বইছে জল। ফলে পুরুলিয়া সঙ্গে বলরামপুরের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Flood

আরো দেখুন