ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রের গড়িমসি, তোপ দাগলেন মানস
মাস্টার প্ল্যানের জন্য অর্থ বরাদ্দ না করে ঘাটাল, মেদিনীপুর, তমলুকের মানুষকে পচিয়ে মারতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। মঙ্গলবার মেদিনীপুরে সাংবাদিকদের কাছে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া (Manas Bhunia) এই মন্তব্য করেন। জেলার অন্য তিন মন্ত্রী শিউলি সাহা, হুমায়ুন কবীর ও শ্রীকান্ত মাহাতও উপস্থিত ছিলেন। এদিন ব্যাঙ্কগুলির আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করতে মানসবাবু সহ মন্ত্রীরা মেদিনীপুরে এসেছিলেন। মেদিনীপুর কালেক্টরেটে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মানসবাবু সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হন।
ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির জন্য তিনি প্রকারান্তরে কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করেন। উদাহরণ হিসেবে বলেন, ২০১১ সালে সেচমন্ত্রী হয়ে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতায় কেলেঘাই কপালেশ্বরী প্রকল্প রূপায়ণ করি। ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের ২২২ কোটি টাকা কেন্দ্র দেয়নি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য বাজেট থেকে টাকা দিয়েছেন। আজ সবংয়ে বন্যা নেই। কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় কাজ হচ্ছে না। ফলে নদীবক্ষে বালি জমছে। নিচু এলাকাগুলিতে জল জমছে।
মানসবাবু বলেন, পাঁচ বছর আগে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের (Ghatal Master Plan) টেকনিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। ফলে ঘাটাল, মেদিনীপুর সদর ব্লক, কেশপুর, ডেবরা, দাসপুর-১, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া পূর্ব, তমলুক-১ ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ হয়ে গেলে এই ব্লকগুলিকে বাঁচানো যায়। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য বাজেটে টাকা বরাদ্দ করে চারটি খাল কাটিয়ে ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র টাকা বরাদ্দ না করলে শীলাবতী, ঝুমি, রূপনারায়ণ, কংসাবতীর পুরানো খাল সংস্কারের কাজ কীভাবে হবে?
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিয়ে কাজ শুরু করুক। রাজ্য তার শেয়ার দেবে। কিন্তু কেন্দ্র তা না করে চুপচাপ বসে আছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে এরাজ্যের বিজেপি নেতারা নীরব কেন? তারা রাজ্যের স্বার্থে এনিয়ে সরব হোক। ডিভিসি রাজ্যকে না জানিয়েই জল ছাড়ছে বলেও তিনি এদিন অভিযোগ করেন। মন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বৃহস্পতিবার থেকে আমারা চার মন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাব। ঝাড়গ্রামে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদাও আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্যের বার্তা ও শুভেচ্ছা পৌঁছে দেব।
মানসবাবু বলেন, এদিন ব্যাঙ্কগুলোর আধিকারিকদের সঙ্গে নানা সমস্যা নিয়ে বৈঠক হয়। ইউনাইটেড ব্যাঙ্ককে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়ায় গ্রাহকরা বিশেষ করে যাঁরা সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তা, তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। ব্যাঙ্কগুলি সেভাবে সহযোগিতা করছে না। মানসবাবু বলেন, জেলায় ৩৬৯টি ব্যাঙ্কের শাখা আছে। ১২৩৮টি আউটলেট ও ৪১৩টি এটিএম আছে। গ্রাহকদের কাছ থেকে ২৫ হাজার ৬১৭ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে জমা হয়েছে। কিন্তু তারা মাত্র ১১ হাজার ১১০ কোটি ৩ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়েছে। কৃষি ও অগ্রাধিকার ক্ষেত্রেও ঋণ দানের পরিমাণ খুবই কম। তিনি বলেন, জাতীয় ব্যাঙ্কগুলির অগ্রগতি খুব একটা ভালো নয়। তাই আমরা রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে আরও সচল করার উপর জোর দিচ্ছি।