প্রথম দিনই বোলিংয়ের দাপটে চালকের আসনে ভারত
টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত যে এমন বুমেরাং হতে পারে, সেটা কি জো রুট ভেবেছিলেন! ঘরের মাঠে তাঁর সতীর্থরা যে এমন লজ্জার ব্যাটিং ‘উপহার’ দেবে, সেটা কি রুট কল্পনা করতে পেরেছিলেন! প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের পুরোটা সময় ক্রিজে টিকতে পারল না ইংরেজরা। মাত্র ৬৫.৪ ওভারে ভারতের জোরে বোলারদের আগুনে বোলিংয়ের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করল সাহেবরা। মাত্র ১৮৩ রানেই গুটিয়ে গেল তাদের প্রথম ইনিংস। বোলারদের লড়াই ব্যর্থ হতে দেননি দুই ওপেনার। ফলে প্রথম দিনের শেষে ভাল জায়গায় ভারত।
প্রথম ওভার থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করেন যশপ্রীত বুমরা। পঞ্চম বলে তুলে নেন রোরি বার্নসকে। ইংল্যান্ড তখন ০ রানে ১ উইকেট। দ্বিতীয় উইকেটে জ্যাক ক্রলি ও ডম সিবলি কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। তবে সেটা স্থায়ী হয়নি। ২৭ রানে ব্যাট করা ক্রলিকে ফেরান মহম্মদ সিরাজ। তবে এই উইকেটটা ঋষভ পন্থের নামের পাশে লেখা থাকলে ভুল হবে না।
ক্রলির ব্যাটের কানায় বল লেগে পন্থের দস্তানায় জমা পড়ে। আপিল করেন উইকেটরক্ষক। অধিনায়ক বিরাট কোহলী ও সিরাজ ব্যাটে-বলে হওয়ার ব্যাপারটা টেরই পাননি। তবে পন্থের নাছোড়বান্দা মনোভাবের জন্য ডিআরএস নিতে বাধ্য হন কোহলী (Virat Kohli)। তৃতীয় আম্পায়ারের রায় ভারতের পক্ষে যায়। স্কোরবোর্ডে ক্রলির আউট হওয়ার মুহূর্ত ভেসে উঠতেই মুখ ঢেকে লজ্জিত বোধ করেন কোহলী। ইংল্যান্ডের তখন ৪২ রানে ২ উইকেট। আর এক ওপেনার সিবলিকে ফিরিয়ে বিপক্ষের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন মহম্মদ শামি।
তবে ৬৬ রানে ৩ উইকেট চলে গেলেও মাথা নত করতে রাজি ছিলেন না রুট। জনি বেয়ারস্টোকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৭২ রান যোগ করেন। তবে বিরাটবাহিনীকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য সেই রান যথেষ্ট ছিল না। টেস্টে কেরিয়ারের ৫১তম অর্ধ শতরান সেরে ফেললেও রুটকে সঙ্গ দেওয়ার সামর্থ বেয়ারস্টো, জস বাটলারদের ছিল না। রুটও পারেননি একা লড়তে। ব্যক্তিগত ৬৪ রানে ফিরে যান তিনি। ফলে শেষ বেলায় একের পর এক উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে গন্ডিও টপকাতে পারেনি ইংরেজরা। বুমরা ৪৬ রানে ৪ ও শামি ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বিপক্ষ ব্যাটিংকে শেষ করে দেন।
গত কয়েক বছর ধরে বিদেশে ভারতের জোরে বোলাররা নিজেদের মেলে ধরলেও ব্যাটিং বারবার ব্যর্থ হয়েছে। তবে এ দিন শেষ বেলায় যেন মাটি কামড়ে টিকে ছিলেন রোহিত শর্মা ও কে এল রাহুল। ফলে প্রথম দিনের শেষে কোনও উইকেট না হারিয়ে ২১ রান তুলে ফেলেছে টিম ইন্ডিয়া।
বল হাতে এখনও জ্বলে উঠতে পারেননি রুটের দুই ‘বুড়ো ঘোড়া’ জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে নতুন লাল বলে ওঁরা পাল্টা আঘাত দিতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।