রেলের টিকিটে কোনও ছাড় আপাতত ফিরছে না, মন্ত্রীর বয়ানে বিতর্ক
টিকিটে ছাড়ের ক্ষেত্রে ট্রেন যাত্রীদের দুর্ভোগ আপাতত কমছে না। বুধবার লোকসভায় এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমানে রেল টিকিটে ছাড়ের ব্যবস্থা পুনরায় কার্যকর করার কোনও প্রস্তাব নেই। রেলমন্ত্রীর এহেন জবাবকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে জল্পনা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ঠিক কী কারণে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কনসেশন বন্ধ রেখে ট্রেনের সাধারণ যাত্রীদের বেশি দামে টিকিট কিনতে একপ্রকার বাধ্য করা হচ্ছে? ট্রেন যাত্রীদের একটি বড় অংশ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানতে চাইছে, করোনা-পূর্ব সময়ের মতো আদৌ কি আর ট্রেনের টিকিটে ছাড় কার্যকর করা হবে? নাকি করোনার কারণে রেলের যে বিপুল অঙ্কের ক্ষতি হয়েছে, টিকিটে কনসেশন বন্ধ করে সেই ক্ষতি মেটানোর চেষ্টা করবে রেলমন্ত্রক? উঠছে প্রশ্ন।
কয়েকটি ক্যাটিগরি ছাড়া বাকি প্রায় সবক্ষেত্রেই ট্রেনের (Train) টিকিটে ছাড় ২০২০ সালের ২০ মার্চ থেকে বন্ধ করে রেখেছে রেল বোর্ড। শুধুমাত্র শারীরিক প্রতিবন্ধীদের চারটি ক্যাটিগরি এবং রোগী ও পড়ুয়াদের ১১টি ক্যাটিগরির ক্ষেত্রে ট্রেনের টিকিটে কনসেশন মিলছে। তবে ট্রেনের টিকিটে সিনিয়র সিটিজেনদের ছাড় বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে সবথেকে বেশি সমালোচনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে রেল বোর্ডকে। এমনই খবর সরকারি সূত্রে। রেল বোর্ড যুক্তি দিয়েছিল, করোনা পরিস্থিতিতে যাতে সাধারণ মানুষ অপ্রয়োজনে ট্রেনে ভ্রমণ না করেন, তা সুনিশ্চিত করতেই সাময়িকভাবে ছাড় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বিনা কারণে কোনও যাত্রী কেন পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন, তার ব্যাখ্যা ওইসময় রেলমন্ত্রক দিতে পারেনি।
বুধবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ট্রেনের টিকিটে ছাড় নিয়ে লোকসভায় লিখিতভাবে যা জানিয়েছেন, তা থেকে কার্যত স্পষ্ট, খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে নতুন করে কোনও চিন্তাভাবনা রেল বোর্ড করবে না। উল্লেখ্য, করোনা আবহে স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখলেও বর্তমানে সারা দেশে যাত্রীবাহী স্পেশাল ট্রেন চালাচ্ছে রেলমন্ত্রক। যেখানে শুধুমাত্র ট্রেনের নাম এবং নম্বরগুলি পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। ট্রেন, তার রুট সবই এক আছে। অনেক সময়ই ট্রেন যাত্রীদের একটি অংশ অভিযোগ করছে যে, রেগুলার ট্রেনের তুলনায় স্পেশাল ট্রেনে বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। আবার কনসেশন না থাকায় প্রবীণ নাগরিকদের অনেক বেশি টাকা দিয়ে ট্রেনের টিকিট কাটতে হচ্ছে। এদিন লোকসভায় অন্য একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে রেলমন্ত্রী এমন ৪৯০টি দূরপাল্লার মেল/এক্সপ্রেস ট্রেনের তালিকা পেশ করেছেন, করোনা আবহে ২০২০-২১ আর্থিক বছরে যেগুলির ৩০ শতাংশ আসনও ভর্তি হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে শিয়ালদহ-আসানসোল স্পেশাল, হাওড়া-আসানসোল স্পেশাল, পুনে-আমেদাবাদ দুরন্ত স্পেশাল, হাওড়া-আজিমগঞ্জ স্পেশাল, গুয়াহাটি-কলকাতা স্পেশাল, শিয়ালদহ-আলিপুরদুয়ার ফাস্ট স্পেশাল, শিলিগুড়ি-বামনহাট ফাস্ট স্পেশাল, নিউ জলপাইগুড়ি-হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জার স্পেশাল প্রভৃতি।