রাজ্যসভার কাঁচের দরজা ভাঙার দায় তৃণমূল সাংসদের কেন? সরব সুখেন্দু
অধিবেশন বানচালের অভিযোগে গতকাল রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয় তৃণমূলের ছয় সাংসদ দোলা সেন, নাদিমূল হক, মৌসম নূর, শান্তা ছেত্রী, আবিররঞ্জন বিশ্বাস এবং অর্পিতা ঘোষকে। বুধবার রাজ্যসভায় অধিবেশন শুরু হতেই তৃণমূল-সহ (TMC) বিরোধী দলের সাংসদরা ওয়েলে নেমে আসেন। প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে পেগাসাস কাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন। বিরোধী শিবিরের প্রায় ৩০ জন সাংসদ প্রতিবাদ করলেও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু বেছে বেছে সাসপেন্ড করেন তৃণমূলের ছয় সাংসদকে।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই দুপুরে ফের উত্তপ্ত হয় রাজ্যসভা। সাংসদদের বহিষ্কারের প্রতিবাদে দেখা যায় বিরোধী ঐক্য। তীব্র বাদানুবাদের জেরে দুপুর সাড়ে তিনটের কিছু পরে রাজ্যসভার কাজকর্ম সারাদিনের মত মুলতুবি হয়ে যায়। যেহেতু তৃণমূল সাংসদদের সাসপেনশন সভার কার্যাবলী চলা পর্যন্ত ছিল, তাই মুলতুবির পর তাঁরা হাউজে ঢুকতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এরপর জোর করে হাউজে ঢোকার চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তিতে ভেঙে যায় রাজ্যসভার একটি কাঁচের দরজা।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু। কিন্তু তার বিরোধিতা করে সরব হন তৃণমূলের মুখ্য সচেতক সুখেন্দু শেখর রায় (Sukhendu Sekhar Ray)। তাঁর যুক্তি, ধস্তাধস্তিতে ভাঙে দরজাটি। তার দায় শুধু সাংসদের ওপর বর্তাবে কেন? তাঁর প্রশ্ন, সভা মুলতুবি হওয়ার পরও কেন সাংসদদের ঢুকতে দেওয়া হল না? এরপর বিরোধীদের প্রতিবাদ করার অধিকারের পক্ষে বলতে ওঠেন বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। এই বিষয়ে তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী অরুণ জেটলির একটি উক্তির উল্লেখ করতেই কোনও কারণ ছাড়াই তড়িঘড়ি সভার কাজ মুলতুবি করে দেন উপাধ্যক্ষ হরিবংশ।
তৃণমূল সাংসদদের পক্ষে দাঁড়িয়ে আওয়াজ তোলেন মল্লিকার্জুন খাড়গেও। তাঁর প্রশ্ন, সভা মুলতুবি হওয়ার পর কেন সাংসদদের ঢুকতে দেওয়া হল না? কেন এই অন্যায় করা হচ্ছে? একে সমর্থন করে উপাধ্যক্ষও অন্যায়ে সামিল হলেন, বলেন তিনি।
মল্লিকার্জুন খাড়গের বিবৃতির প্রশংসা করে ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইট করেন, বিরোধী ঐক্য বজায় আছে।
কেন বিরোধী দলনেতার বক্তব্য চলাকালীন হঠাৎ সভা মুলতুবি হল, এই প্রশ্নে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিরোধী সাংসদদের মধ্যে। তৃণমূল সাংসদদের বহিষ্কার এবং উপাধ্যক্ষের আচরণে সংসদের গরিমা লঙ্ঘিত হল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।