রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

গাড়ল চাষে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর

August 9, 2021 | 2 min read

শুধু কচি পাঁঠা বা মুরগি চাষ নয়। এবার গ্রামের মানুষকে স্বনির্ভর করতে এবং বাঙালির স্বাদে বৈচিত্র আনতে ভেড়া চাষে উৎসাহ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত দপ্তরের (Panchayat Department) অধীনে এই কাজ শুরু হয়েছে। দপ্তরের কর্তারা বলছেন, শঙ্কর প্রজাতির এই ভেড়া আসলে গাড়ল। এক সময় এই রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে গাড়ল (Lamb) চাষ হতো। যেহেতু একটু লবনাক্ত মাটিতে গাড়লের বৃদ্ধি ভালো হয়, তাই দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও সংলগ্ন এলাকায় এই চাষের খ্যাতি ছিল। কিন্তু রাজ্যে তা এক প্রকার অতীত। ফের সেই ধারাকে ফিরিয়ে আনতে উৎসাহ জোগাচ্ছে পঞ্চায়েত দপ্তর।

কেন গাড়ল চাষে জোর দিচ্ছে পঞ্চায়েত দপ্তর? ওয়েস্ট বেঙ্গল কমপ্রিহেন্সিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্তা সৌম্যজিৎ দাস বলেন, মাংস হিসেবে গাড়ল অতি সুস্বাদু। অনেকেই কটু গন্ধের জন্য খাসির মাংস বা পাঁঠার মাংস খান না। কিন্তু গাড়লের মাংসে সেই সমস্যা যেমন নেই, তেমনই তা অনেক নরম। ফলে বহু মানুষ এই মাংস খেতে পছন্দ করছেন। আমরা কমপ্রিহেন্সিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের আওতায় যে মাংস বিক্রি করি, সেখানে গাড়লের মাংস রেখে দেখেছি, তা অত্যন্ত জনপ্রিয়। দামও খাসির মাংসের তুলনায় কম, কেজি প্রতি ৬৮০ টাকা। এ তো গেল একটি দিক। গাড়লের অর্থকরী দিকটিও যথেষ্ট আশাপ্রদ। যাঁরা গাড়ল চাষ করবেন, তাঁদের এর জন্য বেশি খরচ করতে হবে না। যেহেতু এরা শাকাহারি, তাই ঘাস পাতা খেয়েই বাঁচে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল, এদের রোগ-বালাইয়ের প্রকোপ কম। তাই চিকিৎসাজনিত খরচ প্রায় নেই বললেই চলে। গাড়ল সাধারণত বছরে দু’বার বাচ্চা দেয়। গড়ে তিনটি করে বাচ্চা হয়। তাই আর্থিকভাবে অনেকটাই সুবিধা পান কৃষক।

মুর্শিদাবাদের সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশন গাড়ল চাষে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে ইতিমধ্যেই বহু কৃষক গাড়ল চাষে এগিয়ে এসেছেন। দেড়শোর উপর স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই চাষে হাত দিয়েছে। জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ১.৩৭ কোটি টাকা এসেছে গাড়ল চাষকে উৎসাহ দিতে এবং তাকে ফলপ্রসূ করতে।

ভিন রাজ্য থেকে আসা রেওয়াজি খাসির তুলনায় বাংলার কচি পাঁঠার চাহিদা বাড়ছে ক্রমশ। শুধু এরাজ্যে নয়, ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’-এর চাহিদা রয়েছে অন্য রাজ্যেও। পাশাপাশি যদি গাড়লের চাষকেও জনপ্রিয় কোর তোলা যায়, তাহলে বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতিকে তা অনেকটাই সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্তারা বলছেন, আগে ধারণা ছিল, সামান্য লবনাক্ত মাটি না হলে গাড়ল চাষ ভালো হয় না। কিন্তু সেই মিথ ভেঙেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, বাংলার যে কোনও মাটিতেই গাড়ল বেড়ে ওঠে। সেই কারণে সব জেলাতেই এই বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Lamb, #Panchayat Department

আরো দেখুন