দেশের মাটিতে পা রেখে আবেগের জোয়ারে ভাসলেন অলিম্পিক বিজয়ীরা
আবেগের সুনামি! টোকিও ওলিম্পিকসে সোনালি ইতিহাস লেখা নীরজ চোপড়া-সহ (Neeraj Chopra) অন্যান্য পদকজয়ীদের আদরে, ভালোবাসায় বরণ করে নিল জনতা। তেরঙা পতাকা উড়িয়ে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সফল তারকাদের স্বাগত জানাতে রাজধানীর ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য ক্রীড়াপ্রেমী। উপস্থিত ছিলেন সাইয়ের কর্তাব্যক্তি, রাজনীতিকরাও।
‘সোনার ছেলে’ নীরজকে স্বাগত জানাতে হরিয়ানার পানিপত থেকে দিল্লি চলে এসেছিলেন তাঁর বাবা, মা। তাঁরা সাক্ষী থাকলেন ছেলেকে ঘিরে দেশবাসীর প্রবল উচ্ছ্বাসের। নীরজ, রবি, বজরং, লাভলিনাদের টার্মিনাল থেকে বেরোতে দেখেই শুরু হয়ে যায় উৎসব। স্লোগান ওঠে ‘ভারত মাতা কি জয়’। ফুলের মালা পরিয়ে দেওয়া হয় নায়কদের। তুলে দেওয়া হয় পুষ্পস্তবক। কেউ জড়িয়ে ধরে সেলফি তুললেন তো, কেউ অটোগ্রাফের জন্য বাড়িয়ে দিলেন কাগজ-কলম। নাচ-গান-বাজনায় উত্তাল হয়ে ওঠে বিমানবন্দর চত্বর। শুরু হয়ে যায় ধাক্কাধাক্কি, ঠেলাঠেলি, চেঁচামেচি। আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নীরজই। তাঁকে একবার ছোঁয়ার জন্য আকুল হয়ে ওঠে জনতা। ঘুচে যায় করোনাকালের সামাজিক দূরত্ববিধি। উন্মাদনা একসময় পরিণত হয় ভালোবাসার অত্যাচারে। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে কোনও রকমে গাড়িতে উঠে বেরিয়ে যান নীরজ।
বিমানবন্দর থেকে তাঁরা চলে এসেছিলেন দিল্লির একটি নামী হোটেলে। সন্ধ্যায় সেখানেই কেন্দ্র সরকারের তরফে শাল, স্মারক ও পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয় পদকজয়ী ক্রীড়াবিদদের। নীরজের সঙ্গে সংবর্ধিত হলেন কুস্তিতে রুপোজয়ী রবি দাহিয়া ও ব্রোঞ্জজয়ী বজরং পুনিয়া, বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জজয়ী লাভলিনা এবং পুরুষ ও মহিলা হকি দলের সদস্যরা। তবে আগেই বাড়ি ফিরে যাওয়ায় এদিনের অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেননি আরও দুই পদক জয়ী কন্যা পিভি সিন্ধু এবং সোনামাচা চানু।
উল্লেখ্য, এবার টোকিও গেমসে ১২২ জন অ্যাথলিটকে পাঠিয়েছিল ভারত। এসেছে একটি সোনা, দু’টি রুপো ও তিনটি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে সাতটি পদক। ওলিম্পিকসের ইতিহাসে এটাই দেশের সেরা সাফল্য। এর আগে ২০১২ লন্ডন ওলিম্পিকসে এসেছিল সর্বাধিক ছয়টি পদক। তবে তাতে কোনও সোনা ছিল না। এবার সবদিক থেকেই ভারতীয় ক্রীড়ার সোনালি অধ্যায় রচিত হয়েছে সূর্যোদয়ের দেশে। টোকিওতে পদক তালিকায় ৪৮ নম্বরে শেষ করেছে ভারত। ২০২৪ প্যারিস ওলিম্পিকসে এই সাফল্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার আর্জিই অ্যাথলিটদের কাছে রাখলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।