দেশের সেরা জেলা হাসপাতাল এম আর বাঙুর, সিলমোহর নীতি আয়োগের
ফের বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সেরার স্বীকৃতি দিল কেন্দ্র। সেরা জেলা হাসপাতালের মর্যাদা পেল টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতাল। পরিকল্পনা ও নীতি নির্ধারণ সংক্রান্ত দেশের শীর্ষ কেন্দ্রীয় সংস্থা নীতি আয়োগ সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যভবনকে এই খবর জানিয়েছে। নন কোভিড পর্বের অসাধারণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বাঙুরকে এই মর্যাদা দিয়েছে তারা। খবর পেয়ে রীতিমতো খুশির হাওয়া স্বাস্থ্য দপ্তরে। শীর্ষ আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই এম আর বাঙুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বাঙুর-এর ইতিহাস, কাজ, বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন। এম আর বাঙুরের সুপার ডাঃ শিশির নস্কর বলেন, ভালো খবর পেয়েছি। শুধু এটুকুই বলতে পারি। বাকিটা দপ্তরের শীর্ষকর্তারা বলতে পারবেন।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, দেশের জেলা হাসপাতালগুলির মূল্যায়ন করতে গিয়ে নীতি আয়োগ জেলা হাসপাতালগুলিকে তিনভাগে ভাগ করেছিল। ২০০ শয্যা, ৩০০ শয্যা এবং ততোধিক শয্যা। এই তিনশোর অধিক শয্যার বিভাগটিতেই ভারতশ্রেষ্ঠ হয়েছে বাঙুর। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নীতি আয়োগ চিঠি পাঠিয়েছে। তিনশোর অধিক শয্যার ক্যাটিগরিতে ভারতশ্রেষ্ঠ হয়েছে এম আর বাঙুর হাসপাতাল। আমাদের কাছে নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয়।
প্রায় দেড় বছর ধরে বাঙুরের দুটি ক্যাম্পাসই (পুরানো ও নতুন) কোভিড হাসপাতাল (বর্তমান শয্যাসংখ্যা ৭১৩) হিসেবে কাজ করছে। প্রাইভেট হাসপাতালগুলির লাগামছাড়া বিলের মধ্যেই তারা সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। খোদ স্বাস্থ্য অধিকর্তা, একাধিক পদস্থ আমলা কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখানে ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের আত্মীয়স্বজন, ঘনিষ্ঠজনদের এখানে ভর্তি হতে উৎসাহিতও করেছেন। শুধু তাই নয়, সমাজের উপরের তলার তথাকথিত প্রাইভেট হাসপাতালে পরিষেবা নেওয়া বহু মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত, এমনকী ধনী মানুষজন এখানে পজিটিভ হয়ে ভর্তি হয়েছেন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে বিভিন্ন পরিষেবার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।
নীতি আয়োগের এই মর্যাদার স্বীকৃতি অবশ্য এসেছে নন কোভিড পর্বে, যখন বাঙুর সব ধরনের রোগীরই চিকিৎসা করত। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২০১৮-১৯ সালের নন কোভিড পর্বে প্রচুর রোগীকে লাগাতার সুষ্ঠু চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নীতি আয়োগের প্রশংসা পেয়েছে বাঙুর। হাসপাতালের তখন শয্যাসংখ্যা ছিল ১১০৫। কোনও মেডিক্যাল কলেজ না হওয়া সত্ত্বেও এতগুলি শয্যা চালু রেখেও সেখানে দৈনিক বেড অকুপেন্সি রেট বা মোট শয্যায় ভর্তি রোগীর হার ছিল ৯৯.১৯ শতাংশ! যা ওই বিপুল সংখ্যক শয্যার যেকোনও জেলা হাসপাতালের পক্ষে যথেষ্ট গর্বের পরিসংখ্যান। এমনই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।