করোনার সময় দেশে কাজ হারিয়েছেন কত শ্রমিক? জবাব দিল না কেন্দ্র
করোনাকালে সারা দেশে সংগঠিত এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের মোট কতজন শ্রমিক-কর্মচারী কর্মচ্যুত হয়েছেন? নির্দিষ্ট করে প্রশ্ন করা হলেও সোমবার সংসদে এই প্রশ্নের কোনও জবাবই দিলেন না শ্রমমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি। উল্টে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কেন্দ্রের মোদি সরকার এখনও কী কী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, লিখিতভাবে তুলে ধরলেন তারই ফিরিস্তি। স্বাভাবিকভাবেই তথ্যাভিজ্ঞ মহল প্রশ্ন তুলছে, করোনার জেরে কর্মচ্যুতদের পরিসংখ্যান কি লুকোতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার? এবং সেই কারণে স্পষ্টতই এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী? এদিন লোকসভায় লিখিত জবাবে শ্রমমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি জানিয়েছেন, করোনার বিশ্ব মহামারি সংগঠিত এবং অসংগঠিত ক্ষেত্র সমেত সমাজের সর্বস্তরকে প্রভাবিত করেছে। এরপরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চলে গিয়েছেন কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কেন্দ্রের মোদি সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, সেই প্রসঙ্গে।
শ্রম রাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আত্মনির্ভর প্যাকেজের আওতায় ২৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যাপারে একাধিক পরিকল্পনাও রয়েছে। এদিন শ্রমমন্ত্রক জানিয়েছে, আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে ২০২০ সালের ১ অক্টোবর থেকে আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনা চালু করা হয়েছে। যাতে নাম নথিভুক্তির সময়সীমা এক বছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়েছে। মন্ত্রক জানিয়েছে, করোনার কারণে যাঁরা কাজ হারিয়েছেন এবং ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইপিএফওর অধীন কোনও সংস্থা-প্রতিষ্ঠানে পুনরায় কাজে যোগ দেননি, উল্লিখিত কর্মসূচির পরিষেবা পাবেন তাঁরাও। গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান, প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার মতো একাধিক কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মসূচিরও সবিস্তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু একটিবারের জন্যও উল্লেখ করেননি করোনাকালে কর্মচ্যুতদের সংখ্যা।
তবে এদিন লোকসভায় অন্য এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় শ্রম রাষ্ট্রমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি জানিয়েছেন, পরিসংখ্যানমন্ত্রকের আওতায় থাকা ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসের (এনএসও) পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভের (পিএলএফএস) মাধ্যমে এমপ্লয়মেন্ট/আনএমপ্লয়মেন্ট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছর থেকে এই সমীক্ষা চলছে। এই সংক্রান্ত সর্বশেষ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এহেন বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে, নির্দিষ্ট করে করোনা কালের রিপোর্ট সরকারের কাছে নেই। জানা যাচ্ছে, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক-কর্মচারীদের নথিভুক্তির লক্ষ্যে আধার সংযোগ সমেত একটি ন্যাশনাল ডেটাবেস পোর্টাল তৈরি করছে শ্রমমন্ত্রক। একইভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তির জন্য ডিজিটাল ডেটাবেস আগামী সপ্তাহ থেকেই কার্যকর করতে পারে কেন্দ্র। এমনই খবর সূত্রের।
অন্যদিকে, কর্মিবর্গ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনও সরকারি কর্মী কিংবা পেনশন প্রাপকের সন্তানের যদি শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকে, তাহলে ওই কর্মীর মৃত্যুর পর তাঁর সন্তান আজীবন পেনশনের সুবিধে পাবেন। এক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, ওই সন্তানের ফ্যামিলি পেনশন বাদে সামগ্রিক আয় পেনশনের কম হতে হবে। ওই সরকারি কর্মী কিংবা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর সর্বশেষ বেতন এবং মহার্ঘ ভাতার ৩০ শতাংশ ফ্যামিলি পেনশন হিসেবে প্রাপ্য হবে।