দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

কন্যাশ্রীর টাকায় মাস্ক কিনে বিলি, ইন্দাসের এই ছাত্রী পাবে রাজ্যের সন্মান

August 11, 2021 | 2 min read

করোনা পরিস্থিতিতে কন্যাশ্রীর টাকায় মাস্ক কিনে বিলি করায় ইন্দাসের ছাত্রীকে পুরস্কৃত করছে রাজ্য সরকার। আগামী ১৪ আগস্ট কন্যাশ্রী দিবসে ইন্দাসের ছাত্রী পায়েল নন্দীকে সম্মানিত করা হবে। পায়েলের সঙ্গে ওইদিন আরও দুই ছাত্রীকে সম্মানিত করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। তাছাড়া এই অর্থবর্ষে বাঁকুড়ায় এক লক্ষের বেশি ছাত্রীকে কন্যাশ্রীর সুবিধা দেওয়া হবে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার বলেন, রাজ্যের নির্দেশমতো জেলায় কন্যাশ্রী দিবস পালিত হবে। জেলাশাসকের অফিসে কন্যাশ্রী দিবস পালনের অনুষ্ঠানে ছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে।


ইন্দাসের প্রত্যন্ত ছোট গোবিন্দপুর এসএন পাঁজা হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী পায়েল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন গোটা রাজ্য কাবু, সেইসময় মে মাসে পায়েল তার কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে পাওয়া দু’হাজার টাকার মধ্যে ৫০০টাকা দিয়ে মাস্ক কিনেছিল। সেই মাস্ক এলাকার দিনমজুর, দরিদ্রদের বিলি করে। তাছাড়া সংক্রমণ রুখতে মাস্ক পরার জন্যও অনুরোধ করে।


পায়েলের বাবা সুজিত নন্দী পেশায় মৎস্যচাষি। মা মধুমিতা নন্দী গৃহবধূ। মেয়ের পুরস্কার পাওয়ার খবরে খুশি পরিবার। সুজিতবাবু বলেন, ওর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কন্যাশ্রী প্রকল্পে পাওয়া ৫০০টাকা তুলে দিয়েছিলাম। সেখান থেকেই কেনা হয় মাস্ক। পরে তা বাজারে, শ্রমিকদের মধ্যে বিলি করে মেয়ে। স্কুল থেকেই সে এই শিক্ষা পেয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, পায়েল অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। করোনা পরিস্থিতিতে ও কন্যাশ্রীর টাকায় মাস্ক কিনে বিলি করেছিল। এই উদ্যোগ দৃষ্টান্তমূলক। তার এই কাজের কথা ইন্দাসের বিডিও মানসী ভদ্র চক্রবর্তীর মাধ্যমে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল।


পায়েল বলে, স্কুলের হেড স্যারের করোনা হয়েছিল। সেই খবর শুনে আতঙ্কিত হয়েছিলাম। যাতে গ্রামের অন্য কারও না হয় সেই জন্য মাস্ক বিলি করেছিলাম। আমি চাই, এখনও সবাই মাস্ক পরুক।


প্রশাসন সূত্রে খবর, বাঁকুড়া থেকে পায়েল ছাড়াও আরও দুই ছাত্রীকে সম্মান জানাবে রাজ্য। বাঁকুড়া-১ ব্লকের বাসিন্দা সারা মুখোপাধ্যায় জাতীয় মেধা অন্বেষণ পরীক্ষায় ১৯তম র‌্যাঙ্ক করেছিল। এছাড়া রয়েছে ইন্দপুরের অনন্যা মিশ্র। অন্যন্যা করোনা পরিস্থিতিতে বিনামূল্যে গৃহবন্দি শিশুদের জন্য আঁকার স্কুল খুলেছিল। তাদের অঙ্কনসামগ্রী বিলি করেছিল। তাদেরও কন্যাশ্রী দিবসে সম্মান জানাবে রাজ্য। ১৪আগস্ট তাদের সংবর্ধনা দেবে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। 


ইন্দপুরের বিডিও সৌমেন দাস বলেন, অনন্যা ভালো ছবি আঁকে। করোনা পরিস্থিতে সে গ্রামের শিশুদের আঁকা শিখিয়েছে। প্রশাসনের দাবি, করোনা পরিস্থিতির জন্য এবার বড় আকারে কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে না। ব্লক ও জেলাস্তরের অনুষ্ঠানে কন্যাশ্রী প্রকল্পের ট্যাবলো বের হবে।


প্রশাসনের দাবি, ২০২০-’২১ আর্থিক বর্ষে এক লক্ষ সাত হাজার ৩২১জন ছাত্রীকে কন্যাশ্রী-১ প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে। এছাড়া কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পে প্রায় ২৬ হাজার ছাত্রী সুবিধা পাবে। কন্যাশ্রী-১ এ ১৩ বছর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত বয়সি ছাত্রীরা বছরে এক হাজার টাকা করে পায়। এছাড়া কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পে এককালীন ২৫হাজার টাকা পাওয়া যায়। বাঁকুড়ার কন্যাশ্রী প্রকল্পের আধিকারিক রঞ্জনা রায় বলেন, কন্যাশ্রীর টাকায় মাস্ক বিলি, ছবি আঁকা শেখানো ও জাতীয় মেধা অন্বেষণ পরীক্ষায় র‌্যাঙ্ক করায় তিন ছাত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। তার প্রস্তুতি চলছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kanyashree

আরো দেখুন