তৃণমূলের সাংসদ পদ ছাড়বেন শিশির অধিকারী? অস্পষ্ট অবস্থানে জল্পনা
শিশির অধিকারী কি তৃণমূলের সাংসদ পদ ছাড়বেন? কী হতে চলেছে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান? এক দিকে তৃণমূলের ক্রমাগত অভিযোগ, অন্য দিকে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার জবাব তলব। এই দুইয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে জল্পনা জিইয়েই রাখলেন শান্তিকুঞ্জের গৃহকর্তা। ৩০ দিন সময় নিয়েছিলেন স্পিকারের কাছে। সেই সময় দ্রুত এগিয়ে আসছে। তার মধ্যেই বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে কাঁথির সাংসদ বললেন, ‘‘এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। সময় এলে সবটা জানাব।’’
তবে নিজের সাংসদ পদ ধরে রাখতে তৃণমূলের ছাতা যে তিনি আর ধরতে চান না তা শিশিরের কথাতেই স্পষ্ট। রাজ্যের বর্তমান সরকার সম্পর্কে শিশির (Sisir Adhikari) বলেন, ‘‘এই সরকারকে আদৌ মানুষ ভোট দিয়েছে কি না, ভোট জাল হয়েছে কি না সেটা দেখা উচিত। এরা ক্ষমতায় থেকে যা ইচ্ছা তাই করছে। সময় এলে মানুষই এদের জবাব দেবে।’’ নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি এখনও কিছু ভাবিনি। শরীরটা ভাল নেই। ভাল হলে তার পর সিদ্ধান্ত নেব।’’ কিন্তু লোকসভার স্পিকারের দেওয়া সময়সীমা তো এগিয়ে আসছে। এই প্রশ্নের জবাবেও ঝেড়ে কাশেননি বর্ষীয়ান নেতা। বললেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে বাড়িতে আছি। লোকজন দেখা করতে আসছে। সাধ্য মতো মানুষের জন্য কাজ করছি। তবে অসুস্থতার জন্য বাইরে বেরোচ্ছি না। সময় এলে সবটা জানাব।’’
দীর্ঘ প্রায় ছয় দশকের রাজনৈতিক জীবন শিশিরের। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হিসাবে ১৯৬২ সালে পথ চলা শুরু করে ধাপে ধাপে দু’বারের বিধায়ক হয়ে ২০০৯ থেকে এখনও পর্যন্ত কাঁথির সাংসদ। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন ৮০ বছরের এই দুঁদে রাজনীতিবিদ। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আস্থাভাজন শিশিরের রাজনৈতিক জীবনে আচমকাই বদল ঘটে। গত বছর নভেম্বর মাসে তাঁর ছেলে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়ার পর থেকেই ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে অধিকারী পরিবারের দূরত্ব ক্রমেই বেড়েছে।
একুশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে এগরায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় হাজির থাকার পর থেকেই শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে সরব হয়েছে তৃণমূল। তারই ভিত্তিতে লোকসভার স্পিকার শিশিরের অবস্থান জানতে চেয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে স্পিকারের কাছে চার সপ্তাহ সময় চেয়ে নিয়েছেন শিশির। এই সময়ের মধ্যে তিনি কী সিদ্ধান্ত নেন সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।