‘জাগো বাংলায়’ লেখার খেসারত হিসেবে অজন্তাকে সাসপেন্ড করবে সিপিএম
দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে শাস্তিদানের পথেই হাঁটছে সিপিএম। তৃণমূলের দৈনিক মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় (Jago Bangla) কলম ধরে বাম ও কংগ্রেস নেত্রীদের পাশাপাশি জোড়াফুল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের সুখ্যাতি করার অপরাধে অজন্তাকে (Ajanta Biswas) দল থেকে সাসপেন্ড করছে নেতৃত্ব। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অজন্তার জন্য এই শাস্তির সুপারিশ করেছে সেখানকার সংশ্লিষ্ট এরিয়া কমিটি। বিষয়টিতে প্রাথমিকভাবে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে দলের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলী। শীঘ্রই জেলা কমিটির বৈঠক ডেকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়ার পর অজন্তাকে সাসপেনশনের চিঠি ধরানো হবে। তবে কতদিনের জন্য তাঁকে দলের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে সাসপেন্ড করা হবে, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক এই ধরনের অভিযোগে ১ বছর পর্যন্ত কোনও সদস্যকে সাসপেন্ড করা যায় বলে নেতৃত্ব জানিয়েছে। তবে অজন্তাকে অন্তত মাস তিনেকের জন্য শাস্তির কবলে পড়তে হতে পারে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
দিন কয়েক আগে খানিকটা অপ্রত্যাশিতভাবে অনিল-কন্যা জাগো বাংলায় একটি ধারাবাহিক উত্তর-সম্পাদকীয় লেখেন। বাংলার রাজনীতিতে মহিলাদের প্রভাব বা অবদান সম্পর্কিত ওই নিবন্ধের শেষ পর্বে অজন্তা বিগত আড়াই দশকে মমতার ভূমিকা নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলন থেকে ক্ষমতাসীন হয়ে নানাবিধ জনহিতকর প্রকল্প রূপায়ণ করা সহ মমতার ইতিবাচক সব দিকই ছুঁয়ে যান তিনি ওই নিবন্ধে। খোদ মমতার দলের মুখপত্রে অজন্তার এহেন নিবন্ধ যার পর নাই অস্বস্তিতে ফেলে সিপিএম নেতৃত্বকে। যে অনিল বিশ্বাস আমৃত্যু মমতার রাজনীতির তীব্র বিরোধী ছিলেন, দলের সদস্য তথা তাঁর মেয়ে হয়ে কেন অজন্তা বেছে বেছে তৃণমূলের মুখপত্রেই কলম ধরলেন—এটাই ছিল নেতৃত্বের গোঁসা ও ক্ষোভের কারণ। এনিয়ে দলের ভিতরে ও বাইরে শোরগোলের বহর দেখে নেতৃত্বের নির্দেশে দ্রুত অজন্তাকে শোকজ করে সংশ্লিষ্ট এরিয়া কমিটি। সেই শোকজের যে জবাব তিনি দেন, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি পদাধিকারী নেতারা। তাই এবার অজন্তাকে সাসপেনশনের কোপে পড়তে হচ্ছে একপ্রকার নিশ্চিতভাবে। যদিও অজন্তা-ঘনিষ্ঠরা বলছেন, মমতার রাজনৈতিক অবদানের যে তথ্য নিবন্ধে রয়েছে, তা চির বাস্তব। আসলে সত্য তথ্য সামনে আনার জন্য আলিমুদ্দিনের বলি হতে হচ্ছে তাঁকে।