জেনে নিন রাজ্যে কোভিড বিধিনিষেধের মধ্যেও কোথায় অতিরিক্ত ছাড় দিল নবান্ন
লোকাল ট্রেন চালাতেই অনীহা রাজ্যের। এ বাদে প্রায় সবকিছুর ক্ষেত্রেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। সোমবার আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আরও বহু ক্ষেত্রে ছাড় ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। নবান্নর পক্ষ থেকে প্রকাশিত নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে এ বার থেকে মিউজিয়াম এবং বিনোদনমূলক পার্ক খোলা যাবে। একই সঙ্গে করোনা বিধি মেনে তথ্য এবং তথ্য প্রযুক্তির দফতরে ১০০ শতাংশ হাজিরা নিয়ে কাজ করার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উৎপাদন শিল্পের ক্ষেত্রেও ১০০ শতাংশ হাজিরা-সহ কাজ শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছে নবান্ন। নয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১৭ অগস্ট থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, এর আগের নির্দেশিকায় রাজ্য সরকার নাইট কার্ফুর সময়সীমা শিথিল করেছিল। এবং বার-রেস্তোরাঁ ও দোকানপাট খোলা রাখার সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। গত শুক্রবার রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন থেকে রাজ্যে দোকানপাট, বার-রেস্তোরাঁ রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত খুলে রাখা যাবে। আগে এই ছাড় ছিল রাত ৮টা পর্যন্ত। ১৫ অগস্ট থেকে এই শিথিলতা বলবৎ হয়। যদিও রাত সাড়ে ১০ টার পর কোনও ভাবেই বার-রেস্তোরাঁ খোলা রাখা যাবে না বলে জানিয়েছে নবান্ন। কারণ রাত ১১ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত এখনও কার্যকর থাকছে নাইট কার্ফু। একই সঙ্গে সিনেমা হল, প্রেক্ষাগৃহ, থিয়েটার-সহ সুইমিং পুল এবং খেলার স্টেডিয়াম ৫০ শতাংশ দর্শকদের উপস্থিতি নিয়ে খোলা যাবে বলেও জানানো হয়।
লোকাল ট্রেন এখনও কেন চালু করছে না রাজ্য সরকার? এই নিয়ে গতকাল সবিস্তারে ব্যাখ্যা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অনেকে আমায় প্রশ্ন করছেন, লোকাল ট্রেনটা কেন চলছে না? এর কারণ হচ্ছে, ভ্যাকসিনটা আমি যতক্ষণ পর্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে পুরো না দিতে পারব, তাহলে এর (করোনার) প্রকোপ তো বাড়বে। এখন থেকেই তো (তৃতীয় ঢেউ) কন্ট্রোল করতে হবে। আমি জানি সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে যারা কলকাতায় আসতে চায়। সেই জন্য বাস-অটো সব চালু করে দেওয়া হয়েছে”।
পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, “সমস্যা একটাই। সেপ্টেম্বরে যেহেতু থার্ড ওয়েভ আসার কথা রয়েছে, তাই আমাদের এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হচ্ছে। যারা লোকাল ট্রেনে আসতে পারছেন না জানি তাঁদের অনেক অভিযোগ আছে। কিন্তু আপনার জীবনের থেকে তো বেশি দামি কিছু নয়। তাই আরও কয়েকটা দিন আমাদের কষ্ট করতে হবে বন্ধু। আমরা চেষ্টা করছি টিকাকরণ যাতে বাড়ানো যায়। কলকাতার কাছাকাছি জেলাগুলোতে যদি ৫০ শতাংশ ভ্যাকসিনও দিয়ে দিতে পারি, তাহলে লোকাল ট্রেন চালু করে দেব আমার কোনও সমস্যা নেই।”
মূলত তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার কারণেই যে লোকাল ট্রেন এখনও জনসাধারণের জন্য চালু হচ্ছে সেটা কার্যত এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সবই তো চলছে। কিন্তু লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে আমরা আরও কিছুদিন সময় নিচ্ছি কারণ আমাকে তৃতীয় ঢেউটা আটকাতে হবে। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বাচ্চারা তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। আমরা হয়তো বললাম নিয়ম মেনে যান। কিন্তু দেখা যাবে আরও গাদাগাদি করে সবাই চলে গেল। সুতরাং আরও ১৫ দিন, অর্থাৎ অগস্টের ৩০ তারিখ পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের বিধিনিষেধ চালু থাকবে।”