খেলা বিভাগে ফিরে যান

চতুর্থ দিনের শেষেও লর্ডস টেস্টে ভারতকে বাঁচিয়ে রাখলেন রাহানে, পূজারাই

August 16, 2021 | 2 min read

চাপে থাকলেই কি ওঁদের দুজন জ্বলে ওঠেন! বছরের পর বছর ওঁরা দুজন টেস্ট দলের ব্যাটিংয়ে নীরব সৈনিকের ভূমিকা পালন করে আসছেন। তবুও পান থেকে চুন খসলেই অজিঙ্ক রাহানে (Ajinkya Rahane) ও চেতেশ্বর পূজারাকে (Cheteshwar Pujara) কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। তবে এই দুই যোদ্ধাই চতুর্থ দিনের শেষেও ভারতকে বাঁচিয়ে রাখলেন। কারণ দিনের শুরুতে ৫৫ রানে ৩ উইকেট চলে গেলেও পূজারা-রাহানের জন্যই দিনের শেষে ৬ উইকেটে ১৮১ রান তুলে মাঠ ছাড়ল ভারত। বিরাট কোহলির দল এগিয়ে ১৫৪ রানে। অবশ্য এখনও ভারতই চাপে।

নেট মাধ্যম থেকে শুরু করে একাধিক প্রাক্তন ক্রিকেটার পূজারা ও রাহানের উপর খাঁড়া ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। তবে চতুর্থ উইকেটে এই দুজন লড়াকু মনোভাব দেখিয়ে ১০৩ রান যোগ করলেন। মার্ক উডের শর্ট বল ও বাউন্সার হজম করে এই জুটি গড়া কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু জোরে ও সুইং বোলিংয়ের দাপট সামলে রহাণে ৬১ ও পূজারা ৪৫ রান করলেন। যদিও বাকিদের উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসার মানসিকতা দলকে চিন্তায় রাখবে।

বিদেশে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের জব্দ করতে হলে এক নাগাড়ে শর্ট বল করে যাও। সঙ্গে অবশ্যই থাকবে আউট সুইং। এই দুটির বিরুদ্ধে ভারতীয়দের দুর্বলতা তো কয়েক প্রজন্ম ধরে। দ্বিতীয় ইনিংসে সেই দুর্বলতার সুযোগ নিলেন জো রুটের জোরে বোলাররা।

শুরুটা হল কেএল রাহুলকে ফিরিয়ে। প্রথম ইনিংসে শতরান করা রাহুল এ বার পারলেন না। বাইরে যাওয়া বলে খোঁচা দেওয়া তাঁর পুরনো রোগ। এই রোগের জন্যই অতীতে টেস্ট দল থেকে বাদ গিয়েছিলেন। উড সেই রোগ ধরে ফেলতেই খোঁচা দিয়ে ব্যক্তিগত ৫ রানে সাজঘরে ফিরলেন রাহুল। ভারত তখন ১৮ রানে ১।

প্রথম ইনিংসের মতো এ বারও ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে রান তুলতে শুরু করেছিলেন রোহিত শর্মা। কিন্তু তাঁর যে শর্ট বলের প্রতি দুর্বলতা আছে সেটা ভুলে যাননি রুট। উডকে দিয়ে পরপর শর্ট বল করিয়ে যাচ্ছিলেন ইংরেজ অধিনায়ক। রোহিত সেই সবের পরোয়া না করে পুল করে একটা ছয়ও মারলেন। তবে এরপরেই ঘটল বিপত্তি। লাফিয়ে ওঠা একটি বলে হুক করতে গেলে ডিপ ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে থাকা মইন আলির হাতে ধরা পড়লেন রোহিত। ২৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ভারত তখন বেশ চাপে।

অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে চলতি টেস্ট সিরিজ, এ ভাবে শর্ট বলের ফাঁদে পড়ে বেশ কয়েক বার উইকেট ছুড়ে এলেন ‘হিট ম্যান’। দল ফের পড়ল সমস্যায়। এ বার কি রবি শাস্ত্রী তাঁর ওপেনারকে বোঝাবেন? রোহিতের ক্রিজে থাকা দলের জন্য কতটা দরকার, সেটা উপলব্ধি করানোর সময় এসেছে। তবে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট এই কাজটা করবে কিনা জানা নেই।

কিন্তু এরপর যেটা ঘটল সেটা আরও চিন্তার বিষয়। চাপের পরোয়া তিনি করেন না। ক্রিজে এসেই দ্রুত রান তুলতে শুরু করলেন কোহলি। কিন্তু এ বারও লর্ডস থেকে খালি হাতেই ফিরলেন ভারত অধিনায়ক। তাঁর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী রুট এই সিরিজে ইতিমধ্যেই দুটি শতরান ও একটি অর্ধ শতরান করে বসে আছেন। তাঁর চোখের সামনে দিয়ে কেন উইলিয়ামসন বিশ্ব টেস্টের ফাইনাল জিতে চলে গেলেন। পাশের দেশের বাবর আজম সব ধরনের ক্রিকেটে রান করে প্রতি মুহূর্তে কোহলিকে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। তবুও ‘কিং কোহলি’র ব্যাট শান্ত। স্যাম কারেনের বলে খোঁচা দিয়ে ফেরার সময় ভারত ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে আরও ব্যাকফুটে।

২০১৯ সালে ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শেষ বার শতরান করেছিলেন। শেষ অর্ধ শতরান এসেছিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। চেন্নাইয়ের দ্বিতীয় টেস্টে। তারপর থেকে কোহলির ব্যাটে বড় রান নেই। এর মধ্যে আরও বড় সমস্যা হল বিশ্ব টেস্ট ফাইনাল থেকে লর্ডস টেস্ট পর্যন্ত গত ছয় ইনিংসে চার বার আউট সুইং বলে খোঁচা দিয়ে আউট হয়েছেন।

তবে ফের একবার ব্যাটিং বিপর্যয়ের পরেও ভারতের হাত থেকে ম্যাচ এখনও বেরিয়ে যায়নি। কারণ ঋষভ পন্থ এখনও ক্রিজে আছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#India vs Engalnd

আরো দেখুন