রাজ্য জুড়ে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে ভিড়, লম্বা লাইন মহিলাদের
বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বিরোধীদের যাবতীয় অস্ত্রকে ভোঁতা করে দিতে ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) কর্মসূচিকে হাতিয়ার করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাইভোল্টেজ ভোটে রাজ্যবাসী মুখ্যমন্ত্রীকে দু’হাত তুলে আশীর্বাদও করেছিলেন। ভোটের পরেও যে ওই কর্মসূচির জনপ্রিয়তা কমেনি, উল্টে তা বৃদ্ধি পেয়েছে তা বোঝা গিয়েছে সোমবার।
উত্তরবঙ্গ
আকাশে মেঘের ভ্রুকুটি, মাঝেমধ্যে বৃষ্টি। তবু উত্তরবঙ্গের তিন জেলা কোচবিহার, অলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি মহকুমায় দ্বিতীয় দফায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচির প্রথম দিনের ক্যাম্পেই ভিড় উপচে পড়ল বাসিন্দাদের। এবারের ক্যাম্পে প্রথম দিনই সুপার হিট লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। প্রশাসন সূত্রের খবর, পাঁচ জেলার ১১০টি ক্যাম্পে শামিল হয় লক্ষাধিক মানুষ। সর্বত্রই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের কাউন্টারের সামনে মহিলাদের ভিড় ছিল বেশি।
গৌড়বঙ্গ
গৌড়বঙ্গের তিন জেলা মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে দুয়ারে সরকারের নির্বাচনোত্তর পর্বের প্রথম দিনের ক্যাম্পে জেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা চোখে পড়ে। এদিন মালদহ জেলাজুড়ে ২২টি ক্যাম্প খোলা হয়। জেলার ১৫টি ব্লকের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা দেন।
উত্তর দিনাজপুরে এদিন ১৬টি ক্যাম্প খোলা হয়েছিল। লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে উপভোক্তারা আবেদনপত্র জমা দেন। জেলার ন’টি ব্লক ও চারটি পুরসভা এলাকায় ক্যাম্প করে আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও প্রথম দিনেই দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে।
বর্ধমান
প্রথমদিনে পূর্ব বর্ধমানের ৩৫ক্যাম্পে ও পশ্চিম বর্ধমানের ৯টি ক্যাম্পে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। তবে, এদিন সমস্ত প্রকল্পকে ছাপিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। প্রতিটি ক্যাম্পেই মোট আবেদনের সিংহভাগই ছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধু, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, রেশন কার্ডের সংশোধন সহ মোট ১৮টি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা এক মাস ধরে দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
মুর্শিদাবাদ
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে মুর্শিদাবাদের প্রতিটি শিবিরে মহিলাদের ভিড় উপচে পড়ে। ‘লক্ষ্মীরভাণ্ডারে’র ফর্ম নিতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা যায়। তবে লম্বা লাইন হলেও কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা হয়নি। জেলার শীর্ষ আধিকারিকরা বিভিন্ন শিবির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। উপভোক্তাদের সুবিধার জন্য জেলা প্রশাসন দু’টি হেল্পলাইন চালু করেছে।
পশ্চিমাঞ্চল
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামতো সোমবার থেকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, নদীয়া ও আরামবাগে শুরু হল দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। প্রথম দিনের এই কর্মসূচিতে আলাদা করে নজর কাড়ল ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প। চার জেলার প্রত্যেকটি শিবিরেই মহিলাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। শিবিরে এসে অন্যান্য সমস্যার সমাধান হওয়ায় খুশি প্রত্যেকেই।
মেদিনীপুর
সোমবার ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির প্রথম দিন দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় ৭৬টি ক্যাম্পে হাজার হাজার মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ৮৫৯টি এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৭৬০টি ক্যাম্প করা হবে। সোমবার প্রথমদিন পূর্ব মেদিনীপুরে ২৬টি, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩২টি এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় ১৮টি জায়গায় ক্যাম্প হয়। সকাল থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কাউন্টারের সামনেই সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল।