মোদী বিরোধী জোট শক্তিশালী করতে আজ সোনিয়া-মমতা বৈঠক
মোদি-শাহ (Modi Shah)বিরোধী ঐক্যের মহড়া পর্বে আজ, শুক্রবার ফের কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) সঙ্গে বৈঠক করবেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দিল্লি থেকে এই ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করেছেন সোনিয়া। বৈঠকে কংগ্রেস এবং অবিজেপি শাসিত মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও মধ্যমণি মমতাকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে মহাজোট নির্মাণের এই বৃত্ত। কলকাতা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে অংশ নেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সূত্রের খবর, বিরোধী মহাজোট গড়ার মূল কারিগর হিসেবে ওই বৈঠক থেকেই বড়সড় দায়িত্ব নিতে পারেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
আজ, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ৭৭তম জন্মদিন। বিরোধী রাজনীতির পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটিকে ‘মোদি-শাহ’ হটাও পর্বের ‘মহরত’ হিসেবে বাছাই করাটা রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সব মহল। বৈঠকের লক্ষ্য, মিশন-২০২৪। তারই রণকৌশল নির্ধারণে মমতার আহ্বানকে সামনে রেখে মহাজোট গঠনের এই পর্বে ‘সূত্রধর’-এর ভূমিকা পালন করবেন সোনিয়া। বৈঠকে থাকবেন শারদ পাওয়ার, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব থ্যাকারে, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন এবং জেএমএম প্রধান হেমন্ত সোরেন। আমন্ত্রিত কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, অশোক গেহলট এবং ভূপেশ বাঘেলও।
এবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে গত জুলাই মাসে দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন বর্তমানে বিরোধী রাজনীতির প্রধান মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী ঐক্যের প্রদীপ জ্বালানোর সলতে পাকানোর কাজ শুরু করে এসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। একপ্রস্থ বৈঠক করেছিলেন সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। কেজরিওয়াল সহ অন্য বিরোধী নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে আলোচনা সেরেছিলেন মোদি-শাহ হটানোর রণকৌশল নির্ধারণে। সময়মতো বিরোধী জোট তৈরি এবং সম্মিলিতভাবে গেরুয়া শিবির বিরোধী আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ানোই এই পর্বে তাঁর অগ্রাধিকার বলে জানিয়ে এসেছিলেন মমতা।
মাঝে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনী সমীকরণে কংগ্রেস এবং তৃণমূল আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করেছে। মূল শত্রু বাছাই করতে গিয়ে কার্যত সেই সময় তৃণমূলকে মূল টার্গেট করে নিয়েছিল ‘হাত শিবির’। মোদি-শাহের স্বপ্নভঙ্গ করিয়ে জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে মমতা এখন স্বমহিমায় বিরাজমান। এখন কংগ্রেসও বলছে, মূল শত্রু বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এর আগে ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট সোনিয়া গান্ধীর ডাকা ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন মমতা। সেবার বিরোধীদের একজোট করার দায়িত্ব বর্তেছিল মমতার কাঁধে। এবারও সেরকমই গুরুদায়িত্ব তৃণমূল সুপ্রিমোকে নিতে হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
একদিকে জোটের ভিত প্রস্তুত, অন্যদিকে রাজনৈতিক আক্রমণ—পিছু হটছে না তৃণমূল। ওবিসি বিল ইস্যুতে স্বয়ং নরেন্দ্র মোদিকে টার্গেট বজায় রাখছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। প্রধানমন্ত্রী নিজে ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ। গুজরাতের মোধ-ঘাঞ্চি-তেলি সম্প্রদায়ে তাঁর জন্ম। সেই সম্প্রদায়ের একজন মানুষ দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় গর্ব করে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছেন অমিত শাহ। আর তা ঘিরেই তোপ দেগেছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। মোদিকে তাঁর খোঁচা, অনগ্রসর শ্রেণির প্রতিনিধি বলে বিজেপি গর্ব করছে, অথচ সেই আপনিই বাদল অধিবেশনে ওবিসি সংক্রান্ত সংশোধনী বিল পেশের সময় কেন অনুপস্থিত?