অভিজিতের নোবেল জয় – অর্থনীতি পড়ার ঝোঁক বাড়ছে পড়ুয়াদের
ঢালাও নম্বর, অনলাইনে বিনামূল্যে যত খুশি আবেদনের সুবিধার জন্য এবছর কলেজগুলিতে আবেদনের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। তবে, আশার খবর, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, ইংরেজি, ইতিহাসের মতো বুনিয়াদি বিষয়গুলিতে এবার আবেদনের হার বেশ ভালো। কলেজ ভেদে অন্যান্যবারের চেয়ে গড়ে প্রায় দ্বিগুণ আবেদন জমা পড়েছে বিষয়গুলিতে। তবে, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল বিষয় হিসেবে অর্থনীতির (Economic) ঘুরে দাঁড়ানোর ঘটনা। এবার বহু ছাত্রছাত্রী ইকনমিকস অনার্সে আবেদন করেছেন। কোনও কোনও অধ্যক্ষের মতে, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেলপ্রাপ্তি এক্ষেত্রে একটা কারণ হতে পারে।
কলকাতার বেথুন কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা রায় বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই অর্থনীতি নিয়ে চাহিদা কম ছিল। ৪০টি আসনের জন্য খুব সংখ্যক আবেদন জমা পড়ত। তবে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত আবেদনের সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। এমনও হতে পারে, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়ায় বিষয়টা নিয়ে ‘ক্রেজ’ বেড়েছে। এছাড়া, জুলজির মতো বিষয়ে বুধবার রাত পর্যন্ত আবেদনের তিন হাজার সংখ্যা ছাড়িয়েছে। এর কারণ আমার জানা নেই। সম্ভবত, জুলজি পড়ে পরবর্তীতে মাইক্রোবায়োলজি, বায়োটেকনোলজির মতো চাহিদাসম্পন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকতারও সুযোগ থাকে। এর পরেই আবেদনের সংখ্যা বেশি ইংরেজিতে। ইতিহাস এবং বেসিক সায়েন্সের মতো বিষয়গুলিতেও এখনও পর্যন্ত আবেদন আসন সংখ্যার ৪০-৫০ গুণ বেশি। তবে, ফিলোজফি, বাংলা, সংস্কৃতের মতো বিষয়গুলিতে এবারও আবেদনের হার নগণ্যই।
অর্থনীতির বিষয়ে একই মত নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গীর গলাতেও। তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরে ইকনমিকস অনার্সে আবেদন এবং ভর্তি হার তলানিতে পৌঁছেছিল। তবে, এবার ছবিটা একেবারে আলাদা। ইতিমধ্যেই আবেদন আটশো ছাড়িয়েছে। এর রহস্য কী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেলপ্রাপ্তি? সেটা কিন্তু হতেই পারে। বলছেন অধ্যক্ষ। পাশাপাশি, পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নে আবেদনের সংখ্যা আসন সংখ্যা আটগুণ পেরিয়েছে আগেই। গণিতের ক্ষেত্রে সেটা ন’গুণ। তাই বেসিক সায়েন্সের বিষয়গুলির ছবি এবার তুলনায় ভালো। তবে, ইংরেজি, সাংবাদিকতা, বাণিজ্য এবং জুলজির মতো বিষয়গুলিতেও আবেদনের সংখ্যা প্রচুর। সবচেয়ে কম ফিলোজফি এবং সংস্কৃত বিষয়ে। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর কিন্তু আবেদনের সংখ্যায় এখনই আশাবাদী হওয়ার পক্ষপাতী নন। তিনি বলেন, বিনামূল্যে যতখুশি অনলাইন আবেদনের কারণেই সংখ্যাটা বেশি দেখাচ্ছে। শেষ পর্যম্ত কী হয়, সেটাই দেখার বিষয়। তবে, বেসিক সায়েন্স এবং ইংরেজিতে আবেদনের সংখ্যা এবার অনেকটাই বেশি। অন্যান্যবারের মতোই চাপ রয়েছে অ্যাকাউন্টেন্সিতে। তবে, বুধবার রাত পর্যন্ত গতবার হওয়া মোট আবেদনের সংখ্যা কিন্তু ছাড়িয়ে যায়নি এই কলেজে।