রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

সিঙ্গুরে শিল্প করতে দিচ্ছে না বিজেপি সরকার, অনড় মমতাও

August 21, 2021 | 2 min read

 সিঙ্গুরে (Singur) টাটাদের ‘বিতর্কিত জমি’র পাশেই কৃষিনির্ভর শিল্প গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। এটি মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। এগিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি সংস্থা। জোরকদমে চলছে পরিকাঠামো গড়ার কাজ। এই পরিস্থিতিতে এল প্রথম বড় বাধা। আর সেটাও কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) দিক থেকে। সম্প্রতি তারা চিঠি দিয়ে নবান্নকে (Nabanna) জানিয়েছে, ওই জমি তাদের। কারণ রাজ্য সরকারই একসময় তা ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (NHAI) হাতে তুলে দিয়েছিল। ফলে আটকে গিয়েছে শিল্প গড়ার কাজ। কেন্দ্রের দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। নবান্নের সাফ বক্তব্য, জমির মালিকানা আজও তাদের হাতেই। কেন্দ্রের এই শিল্প-বিমুখ আচরণে বেজায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর সরাসরি চ্যালেঞ্জ—‘সিঙ্গুরে শিল্প হবে। ওই জমিতেই হবে।’ 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণ নতুন নয়। নানা প্রকল্প বা উন্নয়নমূলক কাজে ‘ভেটো’ দেওয়ার সংস্কৃতি চলছে বহুদিন ধরেই। এবার সেই তালিকায় নরেন্দ্র মোদি সরকারের নতুন সংযোজন, সিঙ্গুরের শিল্প ও তার জমি। সিঙ্গুরের মাটিতে শিল্প গড়ার কথা বারবার বলে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই এলাকার মাটি ফলনশীল। তাই সেখানে কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ার উদ্যোগ নেয় রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম। সেখানে জমি নিতে আবেদন জানিয়েছিল বহু সংস্থা। তার মধ্যে কয়েকটিকে বাছাই করা হয়েছে। তাদের জমি বণ্টনের কাজও মাঝপথে। গোটা এলাকাকে শিল্পবান্ধব করে তোলার জন্য পরিকাঠামো গড়ার উদ্যোগ নেন নিগমের চেয়ারম্যান বিপ্লব রায়চৌধুরী। তারপরই এই বিপত্তি! সিঙ্গুরের রতনপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ওই জমিকে নিজেদের বলে দাবি করল এনএইচএআই। তারাই এই বিষয়ে চিঠি দিয়েছে রাজ্যকে। 

সূত্রের খবর, অটলবিহারী বাজপেয়ি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সম্পন্ন হয়েছিল এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া। তিনি ‘সোনালি চতুর্ভুজ’ প্রকল্প হাতে নেওয়ার পর হাইওয়ে তৈরির জন্য রাজ্যের কাছে জমিটি চায় এনএইচএআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, তাদের হাতে থাকা নথিতে তৎকালীন বাম সরকারের প্রতিনিধির স্বাক্ষরও রয়েছে। তাই ওই জমিতে রাজ্যের কোনও অধিকার নেই। কিন্তু নবান্নের দাবি, প্রায় ১১ একর জমিটি পূর্তদপ্তরের আওতায় ছিল। এখনও পর্যন্ত জমির মালিকানা রাজ্য সরকারের নামেই আছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি ওই জমির মালিকানা দাবি করলেই, তা তাদের হয়ে যায় না। 

সিঙ্গুরের জমির বিষয়ে রাজ্যকে চিঠি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এনএইচএআই-এর আঞ্চলিক কর্তা আর পি সিং। সংশ্লিষ্ট বিষয়টির সঙ্গে জড়িত এনএইচএআই কর্তা স্বপনকুমার মল্লিক বলেন, রাজ্য সরকারের তরফে জমিটি আমাদের দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জমির মিউটেশন তারা করেনি। আমরা রাজ্যেরই উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ওই জমি নিয়েছি। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে চওড়া করে ছ’লেনের রাস্তা হবে। ওই জমি ছাড়া সেই প্রকল্প গড়া সম্ভব নয়। তাদের এই দাবিকে আমল দিচ্ছেন না মমতা। মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন, ‘নিজেদের জমিতে শিল্প প্রকল্প গড়বে রাজ্য। তাতে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা বরদাস্ত করব না। ওই জমি শিল্পের জন্য চিহ্নিত হয়েছিল। শিল্পদপ্তরের অনুমতি ভিন্ন অন্য কাউকে সেই জমি দেওয়া যায় না।’ তাঁর দৃপ্ত ঘোষণা, ওই জমিতেই গড়ে উঠবে শিল্পতালুক।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #Singur

আরো দেখুন