লাখ টাকার দুর্গা পাওয়া যাবে ১০১ টাকায়!
লাখ টাকার দুর্গা পাওয়া যাবে ১০১ টাকায়! তাও আবার লটারির মাধ্যমে! এমন ঘোষণা করেই চমকে দিয়েছিল কলকাতার বিখ্যাত বারোয়ারি চোরবাগান সার্বজনীন। এবার সেই লটারিরই ফল প্রকাশ হল। একটি নয়, দশ-দশটি পুজোর ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ল আজ।
ব্যাপারটা কি খটোমটো লাগছে? তবে একটু খোলসা করে বলি। করোনা (Corona Virus) মহামারীর অভিশাপে বিধ্বস্ত জনজীবন। কেউ হারিয়েছেন চাকরি, তো কারও ব্যবসা লাটে উঠেছে। সংসার চালাতে হিমশিম অবস্থা সাধারণের। গত বছর পুজো আয়োজনেও পড়েছিল তার প্রভাব। আড়ম্বরে বিস্তর কাটছাঁট করেই হয়েছিল পুজো। এবারও হাল বিশেষ বদলায়নি। তাই করোনা কালে শুধু দুর্গাপুজো আয়োজনের মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেননি চোরবাগান সর্বজনীন (Chorbagan Sarbojonin) দুর্গোৎসব সমিতির উদ্যোক্তারা। নানা সমাজসেবামূলক কাজেও এগিয়ে এসেছেন। আর তারই অঙ্গ হল এই লটারি।
আসলে এবার আর্থিক অনটনে ভুগতে থাকা ১০টি ক্লাবের প্রতিমা তৈরির দায়িত্ব নিয়েছে চোরবাগান। বলা হয়েছিল, বায়না ও প্রতিমা গড়ার জন্য নামমাত্র ১০১ টাকা করে নেওয়া হবে সেই ক্লাবগুলির থেকে। তারই ক্লাইম্যাক্স ছিল শনিবার। কোন ক্লাব প্রতিমা পাবে, তা লটারির মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয়। লটারিতে তোলা হয় ১৩ টি পুজোকে। তার মধ্যে ভাগ্যবান দশটি ক্লাব হল – ফ্রেন্ডস অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন, সারথী, বেলেঘাটা নবালয় সংঘ ক্লাব, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র ক্লাব, মধ্য কলকাতা বিশ্বকল্যাণ সর্বজনীন, মা আগমনি সংঘ, আদি কাম্বুলিটোলা ও শ্যামবাজার স্ট্রিট সর্বজনীন দুর্গৎসব, ভবানীপুর কিশোর সংঘ, দুর্গাপুজা বিএল ব্লক কমিটি, বেলেঘাটা সরকার বাজার বিবেকানন্দ সংঘ ।
চোরবাগান পুজো প্রাঙ্গনেই তৈরি হবে ১০টি প্রতিমা। যার তত্ত্বাবধানে খোদ এবারের চোরবাগানের থিমশিল্পী বিমল সামন্ত। তবে দশটি ক্লাবই নয়, কলকাতার যৌনপল্লি এলাকার দুর্বারের পুজো আয়োজনের দায়িত্বও নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে চোরবাগান। এছাড়াও মেদিনীপুরের ক্লাব ভীমেশ্বরী যুব ছাত্র সংঘ, ২৮ নং পল্লি মহিলাবৃন্দকে প্রতিমা তৈরি করে দিচ্ছে তারা। আর লটারিতে অংশ নেওয়া বাকি তিন ক্লাব? না, তাদেরও খালি হাতে ফিরতে হয়নি। পানশিলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি, তালবাগান আদিবাসীবৃন্দ, ২১ নং কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার ১ টাকার চেক।
পুজো কমিটির তরফে জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, “মহামারীর (Corona Pandemic) জন্য এবার অনেক মৃৎশিল্পী এবং পুজোর সঙ্গে জড়িত লোকেরা কাজ পাচ্ছেন না। প্রত্যন্ত গ্রামের সেই সব মানুষদের কথা ভেবেই আমাদের ৮৬ তম বর্ষপূর্তিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমাদেরও ভাল লাগছে। একসঙ্গে উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে উঠতে পারলেই তো সার্থক হবে দুর্গাপুজো।”