মর্মান্তিক! আলিপুরদুয়ারে জলে ডুবে মৃত্যু এক গণ্ডারের
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ফের গণ্ডারের মৃত্যু। তবে এবার আর চোরাশিকার নয়। শনিবার সাত সকালে তোর্সা নদীর জলে ডুবে গিয়ে জাতীয় উদ্যানের এক পূর্ণবয়স্ক পুরুষ গণ্ডারের মৃত্যু হয়েছে। পাতলাখাওয়া পঞ্চায়েতের শিমলাবাড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা গণ্ডারটিকে নদীতে জলে ভাসতে দেখে বনদপ্তরে খবর দেন। খবর পেয়ে জাতীয় উদ্যানের চিলাপাতা রেঞ্জের কর্মীরা গিয়ে পে-লোডার দিয়ে নদী থেকে মৃত গণ্ডারের প্রকাণ্ড দেহটি তোলে। নদীর জলে গণ্ডারের প্রকাণ্ড দেহ ভাসতে দেখে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। সাত সকালে গণ্ডার দেখতে শিমলাবাড়ি এলাকায় প্রচুর মানুষ ভিড় জমান।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও দীপক এম বলেন, গণ্ডারটির খড়্গ অক্ষতই আছে। মৃত গণ্ডারটির শরীরেও কোথাও জখমের চিহ্ন নেই। জলে ডুবেই গণ্ডারটির মৃত্যু হয়েছে। কীভাবে গণ্ডারটি তোর্সায় পড়ে গেল খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্ভবত নদীর কিনারে মাটি ধসে গিয়েই প্রাণীটি জলে পড়ে যায়।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের জঙ্গলের মধ্যদিয়ে বইছে খরস্রোতা তোর্সা নদী। বনদপ্তরের পাশাপাশি গ্রামবাসীদেরও অনুমান, এমনিতেই বর্ষার সময় মাটির ভিজে ভাব থাকে। সম্ভবত নরম মাটি ধসে যাওয়ার সময় প্রকাণ্ড দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরেই গণ্ডারটি নদীতে পড়ে যায়। তারপর জলে ডুবে মারা যায়। স্থানীয় বাসিন্দা রবি বর্মন ও বিষ্ণু ওঁরাও বলেন, জীবনে এই প্রথম মৃত গণ্ডারের প্রকাণ্ড দেহ জলে ভাসতে দেখলাম। গণ্ডারটি কীভাবে যে জলে পড়ে গেল বুঝতে পারছি না।
প্রসঙ্গত, ওই শিমলাবাড়ি এলাকাতেই ২০০৯ সালে একটি পূর্ণবয়স্ক মৃত গণ্ডারের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। ময়নাতদন্তে প্রমাণিত হয় সেই গণ্ডারটিকে গুলি করে হত্যা করেছিল চোরাশিকারিরা। চলতি বছরের ১ এপ্রিল চিলাপাতা রেঞ্জের মেন্দাবাড়ির জঙ্গলেও একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী গণ্ডারকে গুলি করে হত্যা করেছিল চোরাশিকারিরা। পরে মেন্দাবাড়ির জঙ্গলে মৃত সেই স্ত্রী গণ্ডারটির শৃঙ্গ কেটে নিয়ে চম্পট দেয় চোরাশিকারিরা। মেন্দাবাড়িতে ওই গণ্ডার হত্যার ঘটনার তদন্তে নেমে বনদপ্তর পাঁচ জনকে গ্রেপ্তারও করে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় দু’টি রাইফেল ও তাজা কার্তুজও। যদিও মৃত গণ্ডারটির খোওয়া যাওয়া শৃঙ্গ আজও উদ্ধার হয়নি।
সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারের সোনাপুরের মথুরা মোড়েও নাকাচেকিংয়ের সময় পুলিস অবিকল গণ্ডারের শৃঙ্গের মতো দেখতে বন্যপ্রাণীর একটি দেহাংশ সহ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে। ধৃত দুই যুবকেরই বাড়ি কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়ি এলাকায়।