রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

মমতার সময়েই স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নতি, বলছে মোদী সরকারের রিপোর্ট কার্ড

August 23, 2021 | 2 min read

মাস কয়েক আগেও ভোটপ্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারের তুলোধনা করতে ছাড়েননি বিজেপির (BJP) তাবড় তাবড় নেতারা। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) পর্যন্ত ছিলেন সেই তালিকায়। একটাই অভিযোগ ছিল সবার, ‘দিদির সরকার’ পাঁচ বছরে নাকি কিছুই করেনি! ভোটের ফল যা বোঝানোর বুঝিয়ে দিয়েছে। তাই এবার আসতে শুরু করল প্রশংসা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকা স্বাস্থ্যদপ্তরের কাজে রীতিমতো পঞ্চমুখ মোদী সরকার। এ প্রসঙ্গে নবান্নের দাবিতে কার্যত সিলমোহর দিয়ে কেন্দ্রের রিপোর্ট কার্ড বোঝাল, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বাংলা এগোচ্ছে ভারতসেরা হওয়ার লক্ষ্যে। 


সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে দেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সর্ববৃহৎ সমীক্ষা রিপোর্ট ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে (এনএফএইচএস-৫)। সেই রিপোর্টে মোদী সরকার জানাল, সদ্যোজাতের মৃত্যুর হার হ্রাস, হাসপাতালে এসে প্রসব করানো (প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব) বৃদ্ধি, সরকারিক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের খরচ কমানো ইত্যাদি অসংখ্য বিষয়ে বাংলা এখন ভারতসেরাই। আর এসব সম্ভব হয়েছে গত পাঁচ বছরে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) জমানাতে। 


২০১৫ সালের ‘এনএফএইচএস-৪’ সমীক্ষার সময় বাংলায় সদ্যোজাতের মৃত্যুর হার বা ‘নিওনেটাল মর্টালিটি রেট’ ছিল ২২। পাঁচ বছরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা কমিয়ে এনেছে ১৫.৫-এ। ‘এনএফএইচএস-৪’-এর সময় রা঩জ্যের প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব ছিল ৭৫.২। প্রতি ১০০টি প্রসবের মধ্যে ৭৫.২ শতাংশ হতো হাসপাতালে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের এনএফএইচএস  রিপোর্ট বলছে, রাজ্যে এখন সিংহভাগ প্রসবই হচ্ছে হাসপাতালে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯২ শতাংশ (৯১.৭)। সরকারি হাসপাতালে প্রসবের সংখ্যাও আগের ৫৬.৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭২.৪ শতাংশ। মোদী সরকারের এই রিপোর্ট কার্ড জানাচ্ছে, অসংখ্য বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বাংলা। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা প্রভৃতি বিজেপি শাসিত রাজ্যে কন্যাভ্রূণ হত্যার খবর আকছার শোনা যায়। সেখানে বাংলায় গত পাঁচ বছরে কন্যাসন্তান জন্মের হার অনেকটা বেড়েছে। প্রতি হাজার পুত্রসন্তানের নিরিখে কন্যা জন্মের হার আগের সমীক্ষায় ছিল ৯৬০। এবার বেড়ে হয়েছে ৯৭৩। 


দেশজুড়ে অপুষ্টিতে মৃত্যু অনেক সময় স্বাস্থ্যক্ষেত্রের পরিধি ছাড়িয়ে পরিণত হয় রাজনৈতিক ইস্যুতে। মমতার জমানায় গত পাঁচ বছরে বাংলার মহিলাদের অপুষ্টি যে কমেছে, সেটা স্পষ্ট ধরা পড়েছে মোদী সরকারেরই এই রিপোর্ট কার্ডে। অপুষ্টির অন্যতম সূচক হল বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) ১৮.৫-এর কম হওয়া। গত সমীক্ষায় রা঩঩জ্যের ২১.৩ শতাংশ মহিলার বিএমআই ছিল ১৮.৫-এর নীচে। ‘এনএফএইচএস-৫’-এ দেখা গেল, ১৮.৫-এর কম বিএমআই থাকা মহিলার সংখ্যা নেমে গিয়েছে ১৪.৮ শতাংশে। বাচ্চাদের পুষ্টির সূচকেও গত পাঁচ বছরে উন্নতি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আগের সমীক্ষায় জানানো হয়েছিল, জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়া বাচ্চার সংখ্যা ছিল ৪৭.৪ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে ৫৯.৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মায়ের দুধ, সঙ্গে আধাশক্ত বা শক্ত খাবার খাওয়া বাচ্চাদের সংখ্যাও ৫২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৭.৮ শতাংশ। 


রবিবার এই প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘সরকারের প্রধান ফোকাস এখন স্বাস্থ্যক্ষেত্রে। শুধু আজ নয়, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে। তারই ফল পাচ্ছি আমরা। সবসময় পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীকে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Health

আরো দেখুন