ত্রিপুরায় সাহসী তৃণমূলের প্রশংসায় মানিক সরকার
এক পক্ষকালের মধ্যে বামেদের দু’বার বার্তা। সুদীপ-জয়া-দেবাংশু’র উপর ত্রিপুরায় আক্রমণের পরে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেছিল বামেরা৷ সেখানে ঘটনার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছিল। এবার বিজেপি বিধায়ক অরুণ ভৌমিকের তালিবানি আক্রমণ ও হাড়গোড় ভেঙে দেওয়ার প্রসঙ্গে মানিক সরকারের প্রতিবাদ। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, যত দিন যাচ্ছে ততদিন বাম-তৃণমূল সমীকরণ আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। তৃণমূলের নেতা সুবল ভৌমিক জানিয়েছেন, “জেলাওয়ারি বাম নেতা, কর্মীরা একাধিকবার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তাদের পাশে দাঁড়ানোর মত কেউ ছিল না। এখন রাস্তায় নেমে যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা প্রতিবাদ করছেন। আমাদের নেতারা কলকাতা থেকে এসে এখানে পাশে দাঁড়াচ্ছেন তাতে নীচু তলার বাম নেতা, কর্মীরা সাহস পাচ্ছেন। আর তাদের দেখে বাম নেতারাও বুঝেছেন এখন প্রতিবাদ তৃণমূলই করছে।”
ত্রিপুরায় বামেদের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হবে কিনা, এ নিয়ে জল্পনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। তবে দু’সপ্তাহ আগেই নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানিয়েছিলেন, “এরাজ্যের বামের সঙ্গে ত্রিপুরার বামেদের পার্থক্য রয়েছে। তবে বামেদের সঙ্গে কোনও জোট হবে না। কেউ যদি আসতে চান, তাহলে অবশ্যই তাঁকে স্বাগত জানাবে দল।”ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, “আমরা আইনি পথেই এগোব। ত্রিপুরা সরকার প্রতিহিংসা পরায়ণ আচরণ করছে। তৃণমূলকে ভয় পেয়েছে। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনঘন যাওয়ার ফলে ওরা বিপন্ন বোধ করছে। ওরা ভুল করছে। আমরা সেখানে সংগঠন বিস্তার করতে চেয়েছি। বিজেপি যদি ভালো কাজ করতে পারে, তাহলে এতো ভয়ের কী আছে। তার মানে কোথাও ওরাও বুঝতে পারছে ত্রিপুরার মানুষ বিজেপিকে চাইছে না। বাম-রাম নয় এই বিকল্প একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। ত্রিপুরায় যদি কেউ তৃণমূলের সাথেই না থাকে তাহলে এতো ভয় পাওয়ার কী আছে। মামলা কেন দেওয়া হচ্ছে। ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গে কত বাইরের লোক এসেছে। এখনও কত বাইরের লোক রয়েছেন। কারোর বিরুদ্ধে কি কোনও মামলা দেওয়া হয়েছে? ত্রিপুরায় তৃণমূলের আসা কেবল সময়ের অপেক্ষা। আমরা অহিংস পথে ক্ষমতায় আসব।”
ব্রাত্য বসু দলীয় বৈঠকে জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের বামেদের থেকে ত্রিপুরার বামেদের চারিত্রিকগত পার্থক্য রয়েছে। ওখানকার বামেরা বুঝতে পারছেন একমাত্র লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলই করতে পারে। আমাদের সঙ্গে আসতে চাইলে কেউ আসতেই পারেন। ওখানকার বামেরা অনেক বাস্তব সচেতন। আমরা কোনও জোটের আহবান করি না। বামেদের সঙ্গে আমাদের কোনও জোট হবে না। কিন্তু কোনও বাম নেতা-কর্মী আমাদের সঙ্গে আসতে চান, তাহলে তাঁরা সবসময় স্বাগত।সরাসরি জোটের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেও যেভাবে বামেরা একাধিক ইস্যুতে ত্রিপুরায় তৃণমূলকে সাহস জোগাচ্ছে তাতে নীচু তলায় জোটের আবহ দানা বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে।