কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রাথমিকে ৮৩ জনকে নিয়োগ পূর্ব মেদিনীপুরে

August 24, 2021 | 2 min read

প্রায় দেড় দশকের প্রতীক্ষা অবসান। অবশেষে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পিটিটিআই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৮৩জন প্রাথমিক শিক্ষক পদে যোগ দিচ্ছেন। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে তাঁদের নামের তালিকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ অফিসে এসে পৌঁছেছে। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(প্রাথমিক) সঙ্ঘমিত্র মাকুড় এখন অফিসে আসছেন না। তিনিই জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতির দায়িত্বে আছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই নিয়োগ হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ঠিক করেছে, কোনও কাউন্সেলিং না করে ৮৩জনকে সরাসরি নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। তাঁদের বাড়িতে ডাকযোগে সরাসরি নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে।


উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে পিটিটিআই(প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) জটিলতা তৈরি হয়। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অনুমোদন নিয়ে ওই জটিলতাকে ঘিরে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। দীর্ঘ আন্দোলনের পথ বেয়ে ২০১০সালে গোটা রাজ্যে মেধার ভিত্তিতে ১৭হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্তকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। বাকিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০১৯সালে ২৪জানুয়ারি প্রশিক্ষিতদের নিয়োগের পক্ষে রায় দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেই রায় মেনে ওই বছর অক্টোবর মাসে বেশ কয়েক জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু, সময় মতো বিকাশ ভবনে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা না করায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের একটা অংশ নিয়োগপত্র থেকে বঞ্চিত হন। সেই বঞ্চিত হওয়া অংশ ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাদের নামে নিয়োগপত্র ইস্যু করার আবেদন জানায়। তার ভিত্তিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৮৩জন শিক্ষক নিয়োগপত্র পেতে  চলেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।


সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটের আগে ও পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দু’দফায় ১০৯জন প্রাথমিক শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে লিখিত পরীক্ষায় সফল প্রার্থীদের মেধার ভিত্তিতে ওই নিয়োগ করা হয়। তারপর আরও ৮৩ জন নিয়োগপত্র পেতে চলছেন। অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনসপেক্টর (অ্যাকাডেমিক) প্রদীপ সামন্ত বলেন, পিটিটিআই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৮৩ জনকে নিয়োগের তালিকা এসেছে। এই মুহূর্তে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসে আসতে পারছেন না। তিনিই প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তিনিই নিয়োগপত্র ইস্যু করবেন। যেহেতু এটা আদালতের বিষয়, তাই এব্যাপারে আমরা কোনও কাউন্সেলিং করব না। সরাসরি তাঁদের বাড়িতে ডাকযোগে নিয়োগপত্র পাঠানো হবে।


এ প্রসঙ্গে আন্দোলনে শামিল হওয়া বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সম্পাদক সতীশ সাউ বলেন, প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ করা হোক। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মধ্যে ১১৩জন বিকাশ ভবনে সমস্ত নথিপত্র জমা করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৮৩জনের নামের তালিকায় কারা আছেন এবং কারা বাদ গিয়েছেন তানিয়ে প্রার্থীদের মধ্যেও কৌতূহল দেখা দিয়েছে। এই সুযোগে অসাধু কিছু চক্র ময়দানে নেমে পড়েছে বলেও আমাদের কাছে খবর আছে। সুতরাং রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে পাঠানো নামের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা হোক। তাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে। একইসঙ্গে সরাসরি নিয়োগপত্র ইস্যু করার পরিবর্তে কাউন্সেলিং করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেওয়া হোক।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিক বলেন, ২০১৪সালে নভেম্বর মাসের পর থেকে জেলায় আর কোনও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। দু’হাজারের বেশি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন টিআইসি। অবিলম্বে ওই সব বিদ্যালয়গুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। তাছাড়া, ২০১৯-’২০শিক্ষাবর্ষ থেকে জেলায় প্রায় ৬০০প্রাইমারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠন-পাঠন হচ্ছে। এজন্য অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ জরুরি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#purba medinipur, #Primary

আরো দেখুন