করোনা রোধে শিশুদের ‘কোভ্যাকসিন’ আসতে পারে অক্টোবরের গোড়াতেই
ট্রায়ালে এখনও নেতিবাচক কিছু ঘটেনি। তাই অক্টোবরের গোড়ার দিকেই আসতে পারে করোনা রোধে শিশুদের ‘কোভ্যাকসিন’। আইসিএমআরের তত্ত্বাবধানে ভারত বায়োটেকের তৈরি দেশীয় এই ভ্যাকসিনটিই হবে ২-১৮ বছর বয়সিদের জন্য গোটা বিশ্বের প্রথম টিকা। তাই ৫২৫ জন শিশুর উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রতিটি পর্যায়ের উপর নজর রাখছে আইসিএমআর। কিছুদিনের মধ্যেই ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিজিসিআই)র কাছে ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা পড়তে চলেছে।
আইসিএমআরে’র সংস্থা পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভায়রোলজির ডিরেক্টর ডা. প্রিয়া আব্রাহাম জানিয়েছেন, শিশুদের জন্য কোভ্যাকসিন সেপ্টেম্বর মাসেই অনুমোদন পেয়ে যাবে বলেই আশা করছি। সেই মতো অক্টোবরে তা দেওয়া শুরু হতে পারে। উল্লেখ্য, ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই ১৮ ঊর্ধ্বদের ক্ষেত্রে খুবই ভালো কাজ দিচ্ছে। সরকারি কর্মসূচিতে এই ভ্যাকসিন চলছে প্রথম দিন থেকেই।
অন্যদিকে, ১২ বছরের ঊর্ধ্বে কিশোর কিশোরীদের জন্য জাইডাস ক্যাডিলার তৈরি তিন ডোজের ‘জাইকোভ-ডি’ সম্প্রতি ডিজিসিআইয়ের অনুমোদন পেয়েছে। সেটিও সেপ্টেম্বরের শেষ অথবা অক্টোবরের গোড়ায় দেওয়া শুরু হতে পারে। তবে ১২-১৮ বছর বয়সিদের জন্য এই ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে যেসব কিশোর কিশোরীর শরীরে স্বাভাবিক ইমিউনিটি কম, তারা অগ্রাধিকার পাবে। পরে ধীরে ধীরে অন্যরা। তবে সবটাই নির্ভর করছে উৎপাদন ও সরকারের সঙ্গে কোম্পানির চুক্তির উপর। জাইডাস ক্যাডিলার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. শর্ভিল প্যাটেল জানিয়েছেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রেজাল্টের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন ছাড়পত্র পেয়েছে। তবে এখনও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়নি। উল্লেখ্য, জাইকোভ-ডি ভ্যাকসিনের ১২-১৮ বছর বয়সের এক হাজার কিশোর কিশোরীর উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে।
এদিকে, প্রাপ্তবয়ষ্কদের টিকাকরণের ক্ষেত্রে গোটা দেশে ৫৯ কোটি ডোজ দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত ডবল ডোজ পেয়েছেন মাত্র ১০ কোটি মানুষ। যার মধ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দুটি ডোজ সবচেয়ে বেশি পেয়েছেন ৪৫-৫৯ বছর বয়ষ্ক নাগরিক। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য মোতাবেক, ২৩ আগস্ট পর্যন্ত ৪ কোটি ৯৩ লক্ষ ৭০ হাজার ৬৬৮ জন মানুষ ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ পেয়েছেন।
মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাপ্তবয়ষ্কদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের টার্গেট ৯৪ কোটি ৪৭ লক্ষ ৯ হাজার ৫৯৬ জন নাগরিক। জনসংখ্যার ভিত্তিতেই এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৭ কোটি ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ২৩ জন করোনার ভ্যাকসিন পাবেন।
কিন্তু ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখ থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে করোনার টিকাকরণ। তাই সাত মাসে লক্ষ্যমাত্রার স্রেফ ১০ শতাংশকে ভ্যাকসিন দেওয়ায় সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভায় দলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, প্রতি দশ জনে একজন মাত্র সম্পূর্ণ ডোজ পেয়েছেন। অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশ অনেক এগিয়ে রয়েছে। ইজরায়েল (৬২.৯%), ইতালি-জার্মানি (৫৮.৩%), আমেরিকা (৫১.১%) এবং ব্রাজিলের ২৫.৬% নাগরিকদের ডাবল ডোজ হয়ে গিয়েছে। তাই নরেন্দ্র মোদিকে লক্ষ্য করে ডেরেকের তোপ, ‘প্রচার তো অনেক হল, ভ্যাকসিন কই?’