মাঠের আদলে মন্ডপ, এবার ‘খেলা হবে’ মমতার পাড়ায়
বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের পদত্যাগের ফলে ভবানীপুরে উপনির্বাচন হবে। সেই উপনির্বাচনে ভবানীপুরে প্রার্থী হতে পারেন মমতা। তাই ভবানীপুর বিধানসভা এলাকার তৃণমূল কর্মী মহলে ‘খেলা হবে’ স্লোগান এখনও টাটকা। সেই ভবানীপুরে পুজোর আবহে এবার শোনা যাবে ‘খেলা হবে’ স্লোগান। পুজোর থিম ‘খেলা হবে’ সাজিয়ে তুলেছেন ফ্যাশন ডিজাইনার সৌমেন ঘোষ।
রাজনীতির অঙ্গনে ‘খেলা হবে’ স্লোগান সফল হলেও, তাঁর পুজো সাজানোর ভাবনায় রাজনীতির কোনও ছোঁয়া নেই বলেই জানাচ্ছেন শিল্পী। বরং ভারতে প্রচলিত বিভিন্ন খেলার কথা উঠে আসবে পুজো মণ্ডপে। থাকবে শিশুদের জন্য একটি খেলার জোন। বাঙালির প্রিয় ফুটবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের খেলোয়াড়দের অবয়ব বহন করবে দেবী মূর্তি। একচালার আদলে তৈরি দেবী দুর্গার মূর্তিকে দুই দলের খেলোয়াড়রা ময়দান থেকে কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন পুজোর মণ্ডপে— এমন ভাবেই দৃশ্যায়িত হবে ভবানীপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজো।
অতীতে গ্রামের পুজোয় কাঁধে করে দেবীমূর্তি নিয়ে আসা হত মণ্ডপে। সামনে থাকত লেঠেল পাহারাদার। শিল্পী সৌমেন এক্ষেত্রে পাহারাদারের ভূমিকায় দেখাবেন বেজিং অলিম্পিকে সোনাজয়ী জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়াকে। বর্ষা হাতে তাঁকে দেখা যাবে ভবানীপুরের পুজোয়। এছাড়াও, হকি, ক্রিকেট, টেনিস ইত্যাদি খেলার নানান ছোঁয়াও থাকছে এই উদ্যোগে। এখানে একচালার প্রতিমা গড়ছেন শিল্পী নিজেই। সৌমেনের হাওড়া শিবপুরের ওয়ার্কশপে পুজোর থিম সাজানোর কাজ চলছে জোর কদমে। থিম সাজানোর কাজে সহায়তা করছেন সুবর্ণা ঘোষ।
সৌমেনের কথায়, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী শুধু ‘খেলা হবে’ স্লোগানে দেন না, খেলার প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা আমরা বারবার দেখে এসেছি। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব নিয়ে জটিলতার মাঝেও যেমন তিনি সমস্যা সমাধান করেছেন, তেমনই অন্যান্য ক্রীড়াক্ষেত্রকেও তিনি উৎসাহিত করেছেন। তাই ‘খেলা হবে’ স্লোগান আমি আমার পুজো সাজানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছি। তবে মণ্ডপের কোথাও রাজনীতির ছোঁয়া থাকবে না। থাকবে শুধু দেশের বিভিন্ন ক্রীড়া ক্ষেত্রের কথা।’’
পুজো কমিটির কর্তা শুভঙ্কর রায় চৌধুরী বলেছেন, ‘‘খেলা মানে শুধু অনলাইন গেম বা মোবাইল নিয়ে খেলা নয়। খেলার অর্থ মাঠে ময়দানে নেমে খেলা। এই ভাবনা আমাদের পুজো কমিটি সকলেরই রয়েছে। এবার ১৬ অগস্ট যখন ‘খেলা হবে দিবস’ পালন হল সারা রাজ্য জুড়ে। তখনই আমরা ঠিক করলাম উৎসবের ক্ষেত্রেও এই ‘খেলা হবে’ দিনটিকে ব্যবহার করার। সেই ভাবনা আমাদের শিল্পীকে শোনাতেই তিনি রাজি হয়ে যান। পুজোর সময় আরও অনেক চমক অপেক্ষা করছে।’’
ভবানীপুর এলাকার এই পুজোয় রয়েছে শাসকদলের যোগও। ভবানীপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসবের সভাপতি ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর সন্দীপরঞ্জন বক্সী। তিনি আবার সম্পর্কে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যসভার সংসদ সুব্রত বক্সীর ছোট ভাই।