বাংলা সহায়তা কেন্দ্র থেকে এক বছরের উপকৃত ১৮ লক্ষ
সরকারি প্রকল্পে আবেদন এবং তার স্থিতি জানতে এক বছর আগে রাজ্যজুড়ে চালু হয়েছিল ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্র’ (বিএসকে)। সক্রিয়ভাবে সেগুলিকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রচারের আড়ালেই চলছে সেই কাজ। আর তারই সুফল পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গত এক বছরে এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে উপকৃত রাজ্যের সাড়ে ১৮ লক্ষের বেশি বাসিন্দা। বেশিরভাগ জেলাতেই লক্ষাধিক মানুষ সহায়তা পেয়েছেন। সবথেকে বেশি আগ্রহ দেখা গিয়েছে করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য জানার ক্ষেত্রে। দ্বিতীয় স্থানেই জাতিগত শংসাপত্র সম্পর্কে জানার চাহিদা।
বর্তমানে রাজ্যে মোট ৩,৫৫৪টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চলছে। জাতিগত শংসাপত্র, কিষান ক্রেডিট কার্ড, কিষান মান্ডি, বিভিন্ন স্কলারশিপ, করোনা সংক্রান্ত তথ্য থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি জলের লাইন সংযোগ, কন্যাশ্রী, আধারের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড—মোট ২৬৭টি প্রকল্পের পরিষেবা মিলছে সেখানে। সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানার সুবিধা এক ছাতার নীচে আনায় বন্ধ হয়েছে হয়রানি।
প্রতিটি জেলাতেই ভালোই সাড়া মিলেছে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে। শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাংলা সহায়তা কেন্দ্র থেকে পরিষেবা নেওয়া বাসিন্দার সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়েছে। বাঁকুড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে তা দেড় থেকে দুই লক্ষের মধ্যে। ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, দার্জিলিং, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং কোচবিহারে এই বিষয়ে পরিষেবা নিয়েছে ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ মানুষ। প্রতিটি জেলাতেই করোনা সংক্রান্ত তথ্য জানার আবেদন ছিল সবচেয়ে বেশি।
পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়ায় সেই সংখ্যাটা ৬০ হাজারের বেশি। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রায় ৩৫ হাজার।
সরকারি পরিষেবাকে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আনতে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলির উপর বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। মাসখানেক আগেও তিনি একটি বৈঠকে প্রত্যেক জেলাশাসককে এব্যাপারে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। দেখা যায়, প্রতিটি জেলাতেই বেশ কিছু কেন্দ্র হয় বন্ধ, নয় সেগুলি এমন জায়গায়, যেখানে গিয়ে পরিষেবা নেওয়া ঝক্কির। যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রায় ৫০টির মতো বিএসকে চলছিল বিভিন্ন লাইব্রেরিতে। জেলাশাসকের উদ্যোগে সেগুলিকে ব্লক অথবা মহকুমায় সরানো হয়েছে। ফলে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের তথ্য জানার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হয়েছে সাধারণ মানুষের। জেলার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ‘গ্রামেগঞ্জের দিকে অনেক সময় এসব নিয়ে সঠিক তথ্য জেনে উঠতে পারেন না বাসিন্দারা। তাঁদের জন্য এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধাকে তৃণমূলস্তরে পৌঁছে দিতে সেগুলিকে আরও বেশি সক্রিয় করা হচ্ছে।’