উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

দার্জিলিং টয় ট্রেনের বেসরকারিকরণ নিয়ে দিশাহীন অবস্থায় রেল বোর্ডই

August 29, 2021 | 2 min read

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করে দিলেও হেরিটেজ দার্জিলিং টয় ট্রেনের(Darjeeling Toy Train) বেসরকারিকরণ নিয়ে সম্পূর্ণ দিশাহীন অবস্থায় রেল বোর্ডই। এর প্রধান কারণ বিভিন্ন স্টেশনে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও স্পষ্ট ধারণাই না থাকা। রেলমন্ত্রক সূত্রে স্বীকার করে নেওয়া হচ্ছে, এখনই এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনও রূপরেখা তৈরি হওয়া কার্যত অসম্ভব। জানা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে সময় লাগতে পারে আরও অন্তত ছ’মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত। এখানেই শেষ নয়। রেলভবনের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, এই ইস্যুতে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আদৌ সামাল দেওয়া যাবে কি? যদি দার্জিলিং টয় ট্রেনের বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট রূপরেখা দ্রুত তৈরি করা না যায়, সেক্ষেত্রে মাঝের সময়টিতে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর কাজ করা যায় কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা করছে রেল আধিকারিকদের বড় অংশ।

গত সোমবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ‘ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন। যার মূল প্রতিপাদ্যই হল, দেশের পরিকাঠামো ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ। সেই তালিকায় রয়েছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কিংবা দার্জিলিং টয় ট্রেন। কেন্দ্রীয় সরকার আয় বাড়ানোর জন্য ঐতিহ্যবাহী দার্জিলিং টয় ট্রেনের বেসরকারিকরণের রাস্তা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়, স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে খোদ রেল বোর্ডের দিশাহীনতা সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা যোগ করছে বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল। 

সরকারি সূত্রের খবর, ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন প্রকল্প ঘোষণার পর এক সপ্তাহ কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত দার্জিলিং টয় ট্রেন ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট রেল জোনের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগই করেনি রেল বোর্ড। এই কথা মেনে নিয়েছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক গুণীত কৌর। এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত রেল বোর্ডের পক্ষ থেকে এই ইস্যুতে আমাদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি। ফলে তাদের কী পরিকল্পনা, আমরা জানি না। যতক্ষণ পর্যন্ত দিল্লি থেকে কোনও নির্দেশ না আসছে, জোনও কিছু করতে পারে না। যেভাবে আমাদের সঙ্গে কমিউনিকেট করবে রেলমন্ত্রক, সেইমতোই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

টয় ট্রেনের বেসরকারিকরণের ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত চুক্তিতে এর ভার কোনও কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। ট্রেন পরিষেবা দেওয়া থেকে শুরু করে স্টেশনে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থার হাতেই থাকবে। ট্রেন এবং স্টেশনের ব্র্যান্ডিং ও বিজ্ঞাপনও করা হবে কর্পোরেট সংস্থার মাধ্যমেই। টয় ট্রেনের স্টেশন ব্যবহার করলেই দিতে হতে পারে অতিরিক্ত চার্জ। স্টেশন চত্বরও বাণিজ্যিক ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ‘লিজ’ দেওয়া হতে পারে। রেল কর্মী সংগঠনের অভিযোগ, ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন প্রকল্পের মাধ্যমে রেলের বেসরকারিকরণের পথ আরও প্রশস্ত করছে কেন্দ্র। প্রতিবাদে আগামী ১৩ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর সারা দেশে প্রতিবাদ-সপ্তাহ পালনের সিদ্ধান্ত রেল কর্মচারীদের। ঘোষণা ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান রেলওয়েমেনের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#toy train darjeeling

আরো দেখুন