কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

আর্থিক সাহায্য নিয়ে কফি হাউসের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার

August 30, 2021 | 2 min read

কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজও আছে! নেই শুধু সেদিনের জৌলুস, চাকচিক্য। কোথাও যেন সেই আভিজাত্যেও টান পড়েছে। হাজারো ঝাঁ চকচকে রেস্তরাঁ, নামী দোকানের খাদ্যপণ্যের ‘হোম ডেলিভারি’তে অভ্যস্ত বর্তমান প্রজন্ম। কফি হাউসের নস্টালজিয়া আদৌ তাদের কতটা টানে, তাও বড় প্রশ্ন। এর মধ্যেই এসেছে পরপর  লকডাউনের ধাক্কা। এই দু’বছরের বেশিরভাগ সময় ঝাঁপ বন্ধ ছিল কফি হাউসের। ফলে সঙ্কট ঘনিয়েছে এখানকার কর্মীদের জীবনে। এর ভবিষ্যৎ নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে  আর্থিক সাহায্য নিয়ে কফি হাউসের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। কফি হাউসকে নবরূপে সাজিয়ে তুলতে টাকা দেবে তারা। রাজ্য সরকারের সমবায় দপ্তর এর জন্য ১০ লক্ষ টাকা দেবে এর পরিচালক সংস্থাকে। ইন্ডিয়ান কফি ওয়ার্কার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামে একটি সমবায় এটি পরিচালনা করে। তাদেরকেই এই টাকা তুলে দেবে সমবায় দপ্তর। সম্প্রতি নবান্ন সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। 


দশকের পর দশক ধরে বৌদ্ধিক বাঙালির শিল্প-সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের পীঠস্থান এই কলেজ স্ট্রিট কফি হাউস। তার সারা শরীরে এখন বয়সের ছাপ। চাকচিক্য খসে গিয়ে মলিন চেহারা এখন। বৃষ্টিতে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। বহু বছর নতুন রঙের পোঁচ না পড়ায় দেওয়ালগুলিও বিবর্ণ। নড়বড়ে চেয়ার-টেবিলের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তবুও করোনার ধাক্কা সামলে টিকে থাকতে লড়ে যাচ্ছে কফি হাউস। এই সময়ের মধ্যে কর্মীরা কেউই পুরো সময়ের বেতন পাননি। প্রভিডেন্ট ফান্ডের সঞ্চয় ভেঙে সংসার চালাতে গিয়ে অনেকে ক্রমশ আর্থিক নিশ্চয়তা খুইয়েছেন। শত মানুষের গুঞ্জনে কলতানমুখর কফি হাউস, কফির কড়া গন্ধে এমন মায়াবী আবেদন নাগরিক জীবন থেকে হারিয়ে যাক— চান না কর্মীরা। তাই কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হয়েছিল। সম্প্রতি সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের সঙ্গে দেখা করেন কফি হাউস পরিচালকরা। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই তাদের হাতে ওই অর্থসাহায্য তুলে দেবে রাজ্য সরকারের সমবায় দপ্তর। 


কফি ওয়ার্কার্স কো-অপারেটিভের সম্পাদক তপনকুমার পাহাড়ি কথায় কথায় জানালেন তাঁদের প্রাথমিক পরিকল্পনার কথা। তিনি বলেন, সবার আগে আমরা পুরনো ছাদ মেরামত করব। ছাদ চুঁইয়ে জল পড়া বন্ধ করতে হবে। পুরো হাউস রং করার পরিকল্পনা রয়েছে। কিছু চেয়ার-টেবিল নতুন করতে হবে, কিছু মেরামত করা হবে। তাছাড়া এখনকার চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখান থেকে হোম ডেলিভারি পরিষেবা চালু করার ব্যাপারেও আমরা চিন্তাভাবনা করছি। তবে টাকা হাতে পেলে আমরা আরও নির্দিষ্ট করে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করব। সমবায় দপ্তরের এক কর্তা বলেন, কফি হাউস কলকাতার একটি ‘সিগনেচার’। তাই সরকার তাদের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শীঘ্রই ওদের আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হবে। এখানকার  এক কর্মী বলেন, করোনার দিনকাল তো একদিন শেষ হবেই। আবার খুলবে স্কুল, কলেজ, লোকাল ট্রেন। প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে এই কফি হাউস।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Arup Roy, #Coffee house, #Nabanna

আরো দেখুন