দেউলিয়া মানসিকতা মোদী সরকারের, তুলোধোনা বিজেপি সাংসদের
অর্থনীতির গতি থমকে। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকারের দাওয়াই একটাই—সরকারি সম্পত্তি ‘বিক্রি’। ব্যাঙ্ক, বিমা, জাতীয় সড়ক, ট্রেন, টয় ট্রেন, বিমানবন্দর, বন্দর, বিদ্যুৎ, কয়লা, কী নেই সেই তালিকায়! কখনও বিল পাশ করে, কখনও ‘ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন’ প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে দেশের সম্পদ বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা।
আর তাতে বিজেপির অন্দরেই ক্ষোভ চরমে। রবিবার ‘বেচারাম’ মোদী সরকারের বিরুদ্ধেই ট্যুইটারে গর্জে উঠেছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি আদতে দেউলিয়া মানসিকতা ও হতাশার পরিচয়।
তিনি বরাবর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরোধী। একাধিক কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনায় সর্বদা মুখর।
ক’দিন আগেই ট্যুইটারে তোপ দেগেছেন, ‘নরেন্দ্র মোদী দেশের রাজা নন।’ তারপর এদিন সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর নিশানায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দেশের সম্পদ বিক্রির চেষ্টা। ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, অর্থনীতি যখন গভীর সঙ্কটে, তখন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে বিক্রি করা আদতে মানসিক দেউলিয়াপনা এবং হতাশার সঙ্কেত। এটা মোটেই সুস্থ আদর্শবাদী চিন্তাধারা নয়। সিএসও তথ্য বলছে, সেই ২০১৬ সাল থেকে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। মোদী সরকার একথা অস্বীকার করতে পারবে না।’ ছুটির দিনে সকালেই বিজেপির অন্দরের এই ক্ষোভের ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যায়। ট্যুইটার ব্যবহারকারীদের মধ্যেও দেখা দেয় চাঞ্চল্য।
শ্রীধর নামে এক ব্যক্তি তো এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায়ও জানতে চান সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর কাছে। জবাবে বিজেপির রাজ্যসভার সদস্য সাফ জানান, পরিস্থিতি বিচার করে উপযুক্ত আর্থিক নীতি কার্যকর করতে হবে। আরও তথ্য জানতে তাঁর লেখা বই পড়ার পরামর্শও দিয়েছেন স্বামী। তবে কয়েকজন অবশ্য স্বামীকে ট্যুইটারে ‘বিদ্রোহ’ না করে দলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এর আগে বিক্রির জন্য মোদি সরকার তালিকাভুক্ত করেছে ব্যাঙ্ক, বিমা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, ভারত পেট্রলিয়ামের মতো লাভজনক প্রতিষ্ঠানকে। এবার তার সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে পরিকাঠামো সেক্টরের বেসরকারিকরণ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছেন, ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনে লগ্নির লক্ষ্যমাত্রা ৬ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তে যে দলের একাংশ খুশি নয়, তা স্বামীর ট্যুইট থেকেই স্পষ্ট।