রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

কেলেঘাই – কপালেশ্বরী প্রকল্পেও কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার বাংলা

August 30, 2021 | 2 min read

শুধু ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরে আরও একটি বড় বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্যকে বঞ্চিত করেছে কেন্দ্র। কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পটির রূপায়ণে কেন্দ্রের ৩২৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা তার মধ্যে দিয়েছে মাত্র ১৭৮ কোটি টাকা। সেখানে রাজ্য সরকারের ৩২৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তারা খরচ করেছে ৩৪৮ কোটি টাকা। কেন্দ্র পুরো টাকা না দেওয়ায় ৬৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্পটিতে এখনও পর্যন্ত ৫২৬ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে, টাকার অভাবে কাজ শেষ না হওয়ায় সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। টাকার অভাবে কাজ যাতে আটকে না যায়, তার জন্য রাজ্য সরকার আরও টাকা খরচ করে প্রকল্পটি শেষ করার উ঩দ্যোগ নিয়েছে। রাজ্যের জলসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। 


ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত না হওয়ায় সম্প্রতি অতিবৃষ্টিতে ঘাটাল, দাসপুর সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পের আওতায় থাকা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা সেভাবে প্লাবিত হয়নি। এই প্রকল্পের কাজ অনেকটা হয়ে যাওয়ায় সবং ছাড়াও ভগবানপুর, পটাশপুর, দাঁতন, পাঁশকুড়া সহ আরও কিছু এলাকার মানুষ বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। মানসবাবু জানিয়েছেন, অতিবৃষ্টির ফলে নদীর জল প্রায় বাঁধের সমান উচ্চতায় চলে এসেছিল। তবে আরও বৃষ্টি হলে জল ঢুকে পড়ত গ্রামে। লাঙলহাটি থেকে ঢেউভাঙা পর্যন্ত অংশে কেলেঘাই নদী সংস্কার করা প্রয়োজন। এখানে নদীতে পলি জমে রয়েছে। এদিকে, কেলেঘাইয়ের সঙ্গে আর একটি নদী যুক্ত হয়ে হলদি নদীতে পরিণত হয়েছে। সংস্কারের কাজ শেষ হলে বর্ষার সময় অতিরিক্ত জল হলদি নদী দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কেন্দ্রের কাছ থেকে টাকা পেলে এই কাজ আগেই করে ফেলা যেত। 


বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করার জন্য মানসবাবু বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে সোচ্চার ছিলেন। ইউপিএ সরকারের আমলে প্রকল্পটি কেন্দ্রের অনুমোদন পায়। মোট খরচের ৭৫ শতাংশ দিতে রাজি হয় কেন্দ্র। ২০১২ সালের গোড়ায় প্রকল্পটির ঩শিল্যানাস অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দেশের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ২০১৪ সালে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা সিদ্ধান্ত নেয়, এই ধরনের বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের খরচ কেন্দ্র ও রাজ্য ভাগাভাগি করে খরচ করবে। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ কমে ৫০ শতাংশ হলেও সেই হিসেবে তারা টাকা দেয়নি বলে রাজ্য সরকারের অভিযোগ। 


ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান সহ রাজ্যের আরও কয়েকটি বন্যা ও নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়িত করা নিয়ে আলোচনা করতে কাল মঙ্গলবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী এবং নীতি আয়োগের কর্তাদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের বৈঠক হওয়ার কথা। এই প্রতিনিধিদলে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জলসম্পদমন্ত্রী মানসবাবু ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে নির্বাচিত কয়েকজন মন্ত্রী, বিধায়ক ও এমপি থাকবেন। কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পের বকেয়া টাকার বিষয়টিও তখন তোলা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Ghatal Master Plan, #Keleghai

আরো দেখুন