বরাদ্দ অর্থ খরচের ক্ষেত্রে নেই অস্বচ্ছতা, রাজ্যকে প্রশংসা কেন্দ্রের
বরাদ্দ অর্থ খরচের ক্ষেত্রে কোনও অস্বচ্ছতা নেই। ১০০ শতাংশ তথ্য জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার। অর্থদপ্তরের ভূমিকাও প্রশ্নাতীত। অন্য কেউ নয়, খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের ঘর থেকে এল এই প্রশংসা। গত অর্থবর্ষের বরাদ্দ ও ব্যয়ের হিসেবনিকেশ শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে চিঠি দিল কেন্দ্রীয় সরকারের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস বিভাগ নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমবঙ্গের প্রিন্সিপ্যাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (এজি) অফিস। রাজ্য সরকারের যাবতীয় খরচখরচার উপর নজরদারির সাংবিধানিক দায়িত্ব এই অফিসের।
ডেপুটি অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (প্রশাসন) রাহুল কুমার গত ২০ আগস্ট এই চিঠি পাঠিয়েছেন অর্থদপ্তরের প্রধান সচিবের কাছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘২০২০-২১ আর্থিক বছরে রাজ্য সরকারের অর্থ প্রাপ্তি ও বরাদ্দ অর্থ খরচের ১০০ শতাংশ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সব তথ্য এসেছে অনলাইনে। কোভিড মহামারী পরিস্থিতিতে নানা অসুবিধার মধ্যে চলেছে সরকারি কাজকর্ম। তা সত্ত্বেও স্বচ্ছতার সঙ্গে সব কিছু করা সম্ভব হয়েছে। এটি খুবই উৎসাহব্যঞ্জক।’
অর্থদপ্তরের ভূমিকা প্রশংসনীয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। প্রাপ্ত অর্থ ও খরচের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার ফলে সরকারের আর্থিক হিসেবপত্র (ফিনান্স অ্যাকাউন্ট) নির্ভুল হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ডেপুটি অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (প্রশাসন)। এজি অফিসের পাঠানো এই ধরনের চিঠি নজিরবিহীন বলে মনে করছে রাজ্যের প্রশাসনিক মহল। সাধারণত এভাবে চিঠি পাঠিয়ে অর্থদপ্তরের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন ও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। আর্থিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও নানা পরামর্শ ও নির্দেশ দিয়ে থাকে এজি অফিস। কিন্তু সাম্প্রতিক চিঠিটি তার ব্যতিক্রম।
কেন্দ্রের পাশপাশি রাজ্যগুলির অর্থ প্রাপ্তি ও খরচের উপর নজরদারি করে ইন্ডিয়ান অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট সার্ভিস। দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই বিভাগের অফিস আছে। সেখানেই অর্থ প্রাপ্তি ও খরচের যাবতীয় হিসেব জমা দিতে হয়। রাজ্য সরকার কোনও খাতে অর্থ বরাদ্দের নির্দেশিকা জারি করলেই সেটির প্রতিলিপি যায় এজি অফিসে। বরাদ্দ অর্থ খরচের জন্য ছাড়া হয়েছে কি না সেই তথ্য তাদের জানাতে হয়। অর্থদপ্তর থেকে নানা খাতে টাকা পেয়ে থাকে থেকে বিভিন্ন দপ্তর। তার নির্দেশিকা জারি হলে সংশ্লিষ্ট অফিসের ড্রয়িং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার (ডিডিও) ট্রেজারি-পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট অফিস থেকে ওই অর্থ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। বিভিন্ন খাতে খরচ সংক্রান্ত তথ্য সেখান থেকে অর্থদপ্তরের মাধ্যমে এজি-র কাছে আসে। এজি অফিসের সাম্প্রতিক চিঠি থেকে এটা পরিষ্কার গত আর্থিক বছরে এই প্রক্রিয়ায় কোনও অস্বচ্ছতা পাওয়া যায়নি। গত ২০১৬ সালে আইএফএমএস চালু হওয়ার পর আর্থিক লেনদেনের যাবতীয় কাজ অনলাইনে হচ্ছে। তারই সুবিধা মিলেছে।