বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিয়ে মুখ খুললেন মমতা
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (viswabharati) অচলাবস্থা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee)। বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, ফাজিল, হাই মাদ্রাসা, জয়েন্ট এন্ট্রান্স সহ বিভিন্ন পরীক্ষার কৃতীদের জন্য তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের সূচনা করেন মমতা। সেখানেই বীরভূমের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলার সময় শান্তিনিকেতন প্রসঙ্গ টানেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মমতা বলেন, “শান্তিনিকেতন গর্বের জায়গা ছিল, আজ প্রবলেম হচ্ছে।” রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ ও বীরভূমের গরিমার কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, “বিশ্বভারতীর একদিকে বাউলের একতারা, অন্যদিকে লাল মাটির পথ, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়।”
অনেকের মতে, মমতা এদিন বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন বিশ্বভারতীর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি যতটা বিরক্ত ততটাই উদ্বিগ্ন।
এর আগে পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল তোলাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘাত বেঁধেছিল বিশ্বভারতীতে। সেই সময়ে একদিকে ছিল বিশ্ববিদ্যালয় বিরুদ্ধে প্রায় সবাই। জেলা প্রশাসন, আশ্রমিক, ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী—সকলেই বলেছিল শান্তিনিকেতনকে নরকগুলজার বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। রবি ঠাকুর যে মুক্ত পরিবেশে শিক্ষার দর্শন নিয়ে বিশ্বভারতী গড়েছিলেন তার মূলেই আঘাত করা হচ্ছে। সেই সময়েও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, পাঁচিল তুলে গর্বের বিশ্বভারতীকে কারাগার বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই প্রথম মুখ খুললেন মমতা।
অচলাবস্থা কাটার কোনও নাম নেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের। একদিকে ছাত্ররা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে উপাচার্যের বাংলোর সামনে। অন্যদিকে অনড় বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। এই দড়ি টানাটানির মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বুধবার হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আর্জি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নিক রাজ্য সরকার। শুক্রবার এই মামলার শুনানি হতে পারে হাইকোর্টে। প্রসঙ্গত, এর আগে প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্য নরেন্দ্র মোদীকেও চিঠি লিখে ঘেরাও নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
গত সোমবার ছাত্র ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার-সহ অন্যান্যদের এফআইআর দায়ের করা হয় শান্তিনিকেতন থানায়। সেই অভিযোগপত্রে ছাত্র ঐক্য মঞ্চের পক্ষে বলা হয়েছে, স্মারকলিপি দিতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েক জন আধিকারিক ছাত্রদের জোর করে বের করে দেয়। এবং গাড়ির চালককে নির্দেশ দেয় ছাত্রদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার জন্য। এ নিয়ে এর আগে দুই ছাত্র খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছে ছাত্র মঞ্চ।