রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পানাগড়ের শিল্পতালুকে ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ জার্মান সংস্থার

September 3, 2021 | 2 min read

ছবি: প্রতীকী

জার্মানির রাইন নদীর তীরে রুঢ় শিল্পাঞ্চলের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। স্বাধীনতার পর প্রথম কয়েক দশকে দামোদর নদের তীরে দুর্গাপুরজুড়েও গড়ে উঠেছিল একাধিক কারখানা। শিল্পের মুখ হয়ে ওঠা দুর্গাপুর সেই সময় ‘ভারতের রুঢ়’ বলে পরিচিতি পায়। তারপর অবশ্য রা‌ইন ও দামোদর, দুই নদী দিয়েই বহু জল গড়িয়েছে। জার্মানি আরও উন্নত হলেও ধুঁকছে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল। মরা গাঙে জোয়ার এনে এবার সেই জার্মানির সংস্থাই বিনিয়োগ করছে দুর্গাপুরের অদূরে পানাগড় শিল্পতালুকে। ইতিমধ্যেই সেখানে সিলিকন ইমালশন উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করছে জার্মান সংস্থা ওয়াকার। প্রাথমিকভাবে এই বিদেশি সংস্থার ২০০কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা থাকলেও রাজ্যে এমন শিল্পবান্ধব পরিবেশ থাকলে তা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 


বুধবার পানাগড়ে শিল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করে শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে আশাপ্রকাশ করেন জার্মান সংস্থার জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডঃ সাসচা বুচেল। এমনকী এই শিল্পতালুকে অন্য সংস্থাকে মেশিন সরবরাহ করে প্রযুক্তিগত সাহায্য করছে আরএক জার্মান সংস্থা ব্রুকনার। তাদের বিপণন বিভাগের প্রধান পিটার মার্টেসও পানাগড় শিল্পতালুকের পরিকাঠামো দেখে খুশি। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক শিল্পের শিল্যানাস অনুষ্ঠানে রাজ্যের নামী শিল্পপতিদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও এসেছিলেন। এই শিল্পতালুক দেখে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যার জেরে নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে পানাগড়ে। এতেই অক্সিজেন পাওয়ার আশায় আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল।


দুর্গাপুর ব্যারেজ বা ডিএসপি, বিধানচন্দ্র রায়ের স্বপ্নের নগরী দুর্গাপুর গড়ে তুলতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল নানা উন্নত দেশ। দামোদরের তীরে কয়লাখনি ঘেঁষা এই শিল্পাঞ্চল দ্রুত দেশের বাণিজ্যের অন্যতম ভরসাস্থল হয়ে ওঠে। যদিও দীর্ঘ বাম আমলে শ্রমিক আন্দোলন সহ্য করার পাশাপাশি শিল্পের পরিবেশ কলুষিত হওয়ায় গৌরব হারায় দুর্গাপুর। কারখানা বন্ধের হিড়িক শুরু হয় বাম আমলে। গত কয়েক বছরেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। হতাশা গ্রাস করেছিল শ্রমিক মহলে। কিন্তু তৃতীয় তৃণমূল সরকার গঠনের প্রথম থেকেই শিল্পের প্রতি তাদের বাড়তি গুরুত্ব আশা জাগিয়েছে এলাকায়। পানাগড় ‌ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক নিয়ে নজর দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাই কলকাতার মতো মেট্রো সিটি সংলগ্ন এলাকার থেকে এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছেন শিল্পপতিরা। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন একাধিক বিদেশি শিল্প সংস্থার শীর্ষ কর্তারা। যে পলিফিল্ম কারখানার শিলান্যা঩সে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তার কর্ণধার সিকে ধানুকা একাধিকবার জার্মান সংস্থার কর্তা পিটার মের্টাসের নাম করে প্রশংসা করেন। কারণ তাঁর কারখানায় প্রযুক্তিগত সাহায্য করছে জার্মান সংস্থা। 


পিটার বলেন, রাজ্যে খুবই ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শিল্পতালুকের পরিকাঠামোও উন্নত। এখানে আরও অনেক বিনিয়োগ আসবে বলে মনে হচ্ছে।
ওয়াকার কোম্পানির শীর্ষ কর্তা বুচেল বলেন, আমাদের উৎপাদিত সামগ্রীর বাজার এখনও পশ্চিম ও উত্তর ভারতেই বেশি। কিন্তু রাজ্য সরকার যেভাবে এখানে শিল্প নিয়ে জোর দিয়েছে, তাতে খুব শীঘ্রই পূর্ব ভারতেও আমাদের সামগ্রীর চাহিদা বাড়বে বলে আশা করছি। সব ঠিক থাকলে আমরা বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়াব।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Industry, #Panagarh, #German company

আরো দেখুন