বেশি ভাড়া নিচ্ছে বাস? যাত্রী সেজে হানা দেবেন আধিকারিকরা
বেসরকারি বাস-মিনিবাসে ইচ্ছামতো বাড়তি ভাড়া আদায়ে রাশ টানতে এবার যাত্রী সেজে হানা দেবেন পরিবহণ দপ্তরের পরিদর্শকরা। আগামী সপ্তাহ থেকেই মোটর ভেহিকেলসের ইনসপেক্টররা (এমভিআই) পুরোদমে রাস্তায় নেমে পড়বেন। উল্লেখ্য, গত ১৮ আগস্ট কলকাতার রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটির সচিব বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলিকে বাড়তি ভাড়া না নেওয়ার কথা জানিয়ে কড়া চিঠি দিয়েছিলেন। যাত্রীরাই লাগামছাড়া ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু তাতে তেমন কাজ না হওয়ায় এবার সরকারি পরিদর্শকদের ‘সারপ্রাইজ ভিজিটে’ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দপ্তর। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে রাজ্যজুড়ে দপ্তরের অধীনে প্রায় ৬০০ জন এমভিআই রয়েছেন। পরিবহণ কর্তাদের দাবি, শুধু বৃহত্তর কলকাতা থেকেই বাড়তি ভাড়া নিয়ে ভূরি ভূরি অভিযোগ আসছে। সেই সূত্রে শহর ও শহরতলির বুকে যে বাস-মিনিবাস চলছে, সেগুলিতে আচমকা পরিদর্শন করবেন এমভিআইরা।
কী করবেন এই এমভিআই’রা? জবাবে এক পরিবহণ কর্তা বলেন, বিনা নোটিসে আচমকা যে কোনও রুটের বাসে উঠে পড়বেন তাঁরা। যাত্রী সেজে নির্দিষ্ট দূরত্বের টিকিট কাটবেন। ভাড়া আদায়ে অনিয়ম দেখলে সংশ্লিষ্ট বাসের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেবেন।
পাশাপাশি বাসের যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করবেন। সেখানে কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। ওই পরিবহণ কর্তার দাবি, আমরা ইতিমধ্যেই বাস মালিকদের সংগঠনগুলিকে আচমকা পরিদর্শনের কথা জানিয়েছি। অনিয়ম ধরা পড়লে সেই বাসের মালিককে জরিমানা করা হবে। চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বাসের পারমিট বাতিল করা হতে পারে বলেও জানান তিনি। তবে ওই আধিকারিকের দাবি, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার সব রকম সহযোগিতা করতে রাজি। নিয়ম মেনে রাস্তায় বাস-মিনিবাস চলুক, এটাই সরকারের একমাত্র লক্ষ্য।
এমভিআই’দের এই পরিদর্শন নিয়ে বেসরকারি বাস-মিনিবাস মালিকদের সংগঠনগুলির মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে। সিটি সুবার্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহার কথায়, এই ভিজিট চালু হলে গণ পরিবহণ মুখ থুবড়ে পড়বে। কারণ, এটা কোনও সমাধান সূত্র নয়। জ্বালানির অগ্নিমূল্য বাজারে বাস ভাড়া নিয়ে রাজ্য সরকারের থেকে তাঁরা ইতিবাচক পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেন। অন্যদিকে, অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, যেখানে ১০ টাকা ভাড়া, সেখানে যদি ২০ টাকা নেওয়া হয়, তাহলে তা সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ, এক টাকাও বেশি ভাড়া নেওয়ার আইনি অধিকার বাস মালিক কিংবা কর্মচারীদের নেই। কিন্তু জ্বালানি সহ আনুষাঙ্গিক খরচের বোঝার বিষয়টিও রাজ্য সরকারকে বুঝতে হবে। না হলে বেসরকারি পরিবহণ ক্ষেত্র পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। যাত্রীদের কম খরচে যাতায়াতের এই মাধ্যমকে মর্যাদা দিয়ে সরকারের এব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন রাহুলবাবু।