দেশ বিভাগে ফিরে যান

লক্ষ্য ত্রিপুরায় সংগঠন মজবুত করা, মাঠে ‘খেলতে’ নামছে তৃণমূল

September 3, 2021 | 2 min read

 

ত্রিপুরায় বিজেপি দলের অভ্যন্তরে ক্ষোভ প্রতিদিনই বাড়ছে। সুদীপ রায় বর্মনের মতো বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়করা ইতিমধ্যে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। আর এবার ত্রিপুরা বিধানসভার স্পিকার পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রেবতীমোহন দাস। সংগঠনে তাঁর মন, অথচ তাঁকে বিধানসভায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। যাতে তিনি আগ্রহী ছিলেন না। এমনটাই জানিয়েছেন রেবতীবাবু। ক্ষোভের পরিস্থিতি সামাল দিতে ইস্তফা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রেবতীবাবুকে বিজেপির সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হল। এদিকে, ত্রিপুরার প্রতিটি জেলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানে ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল।


দলীয় সূত্রে খবর, ত্রিপুরায় বিজেপির বর্তমান সাংগঠন নিয়ে বেশকিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন একাধিক বিধায়ক। আর সেই সূত্রেই বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ পদ ছেড়ে দিয়েছেন রেবতীমোহন দাস। তিনি ডেপুটি স্পিকারের কাছে এদিনই ইস্তফাপত্র জমা দেন। তাঁর বক্তব্য, আমি বিপ্লব দেবকে আগেও একাধিকবার বলেছি, আমাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিন। আমি সংগঠন করা লোক। স্পিকার পদে থাকতে চাই না। তাই ইস্তফা দিলাম। 


রেবতীবাবুর বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে যেতে হয়। ফলে বিধানসভার মধ্যে আটকে থাকা সম্ভব নয় বলে জানান। স্পিকারের ইস্তফা সংক্রান্ত বিষয়টি যে দলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করছে, তা বুঝতে পারে রাজ্য নেতৃত্ব। তাই দেখা গিয়েছে, সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি রেবতীবাবুকে দলের রাজ্য দপ্তরে আসতে বলা হয়। সেখানে ছিলেন ত্রিপুরা বিজেপির রাজ্য সভাপতি মানিক সাহা। রেবতীবাবুর হাতে দলের রাজ্য সহ-সভাপতির নিয়োগপত্র তুলে দেন মানিকবাবু। রাজ্য সভাপতি জানান,  অভিজ্ঞতার নিরিখে সহ-সভাপতি পদে দেওয়া হয়েছে রেবতীবাবুকে।


তবে বিজেপি অন্দরে এখন জোর চর্চা চলছে অধ্যক্ষের ইস্তফা নিয়ে। বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পদে আছেন বিশ্ববন্ধু সেন। বিজেপি সূত্রের খবর, রতন চক্রবর্তীকে অধ্যক্ষ করছে বিজেপি। 
এদিকে, বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল অক্সিজেন জোগাচ্ছে তৃণমূলকে। এদিন ত্রিপুরার সংগঠন নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী সুস্মিতা দেব, মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কীভাবে ত্রিপুরায় সংগঠনের বিস্তার ঘটানো হবে, তার রূপরেখা তৈরি হচ্ছে। সুস্মিতা জানিয়েছেন, ত্রিপুরা নিয়ে আমরা সিরিয়াস। একেবারে নিচুস্তর থেকে সংগঠন তৈরি করা হচ্ছে। ক্যাডার তৈরি করা হবে। তৃণমূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রতিটি জেলায় যাবেন সুস্মিতা। স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলবেন। মানুষ কী চাইছে, সেটা বোঝার চেষ্টা হবে। সদস্য সংগ্রহ অভিযানও হবে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে সংগঠনকে একেবারে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এখানে ব্রাত্য বসু বলেছেন, ত্রিপুরায় লড়াই হবে দেবী বনাম দানবের। এদিনও উদয়পুরে তৃণমূল কর্মীদের উপর বিজেপি হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। পাল্টা ত্রিপুরা রাজ্য সভাপতি মানিক সাহা বলেছেন, কমিউনিস্টদের ডুপ্লিকেট পার্টি বা কার্বন কপি হল তৃণমূল। ভাঁওতা আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। তৃণমূল ত্রিপুরায় এসে হইচইয়ের মাধ্যেমে নাটক করছে।
এদিকে, এদিন ত্রিপুরা হাইকোর্ট পুলিসের কাছে জানতে চেয়েছে সরকারি কাজে তৃণমূল নেতারা বাধা দিয়েছিলেন, তার কি কোনও তথ্য-প্রমাণ আছে। ভিডিও ক্লিপ আছে বলে জানায় পুলিস। তা জমা দিতে বলা হয়েছে। আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব বলেন, হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট তৃণমূল নেতাদের উপর মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। কারণ হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে বলেছে, তৃণমূল যুব নেতা নেতাদের কেন তেলিয়ামুড়া থেকে খোয়াই নিয়ে আসা হয়েছিল। কেন সারারাত তাঁদের রেখে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী শুনানি তিন সপ্তাহ পর।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#tripura, #tmc, #Trinamool Congress

আরো দেখুন