বাংলাতেই হবে স্পুটনিক লাইট সিঙ্গল ডোজের প্রথম ট্রায়াল
দ্বিতীয় ডোজের নির্ঘণ্ট নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই অপেক্ষা চলছিল, কবে আসবে সিঙ্গল ডোজের করোনা ভ্যাকসিন। আরও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি চর্চায় রাশিয়ার স্পুটনিক লাইট। এই সিঙ্গল ডোজ ভ্যাকসিনেরই ট্রায়াল শীঘ্র শুরু হচ্ছে দেশে। আর প্রথম তা হতে চলেছে এই রাজ্যের তিনটি হাসপাতালে। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং ই এম বাইপাস লাগোয়া দু’টি প্রাইভেট হাসপাতাল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই প্রথম রুশ ফর্মুলায় ভ্যাকসিনটি বানানোর কথা হেটেরো, ডাঃ রেড্ডি’স ল্যাব প্রভৃতি ভারতীয় টিকা নির্মাতা সংস্থার। প্রতিটি কেন্দ্রেই ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর টিকার পরীক্ষা করবে হেটেরো। ন্যূনতম ২১৩ জন স্বেচ্ছাসেবীর অংশগ্রহণ ও ইতিবাচক ফলাফল আসা জরুরি। অন্যদিকে ডাঃ রেড্ডি’স ল্যাবের ট্রায়ালের জন্য জরুরি ১৭৯ জন স্বেচ্ছাসেবীর অংশগ্রহণ ও ইতিবাচক ফলাফল। বিদেশে ইতিমধ্যেই অনুমোদন পাওয়া টিকার এই ফেজ থ্রি ট্রায়ালকে ‘ব্রিজিং’ বলা হয়।
হাসপাতাল সূত্রগুলির খবর, এথিক্যাল কমিটির অনুমোদন মিললে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই কলকাতায় শুরু হয়ে যাবে ডাঃ রেড্ডি’স-এর ট্রায়াল। অন্যদিকে হেটেরোর ট্রায়াল শুরু হবে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ২৮ দিনের পর্যবেক্ষণের রিপোর্ট সন্তোষজনক হলে পুজোর পরই টিকা চলে আসতে পারে বাজারে।
প্রসঙ্গত, জনসন অ্যান্ড জনসনের সিঙ্গল ডোজ ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এ রাজ্যে হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। যদিও পরিস্থিতির প্রয়োজনে সেটির জরুরিভিত্তিক প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া। ডাঃ রেড্ডি’স ল্যাব ইতিমধ্যেই স্পুটনিক লাইটের অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। আর হেটেরোর ক্ষেত্রেও অনুমতি শীঘ্রই মিলতে পারে বলে আশাবাদী রাজ্যের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ফ্যাসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনার। তিনি বলেন, ‘এই রাজ্যে স্পুটনিক ভি-এর প্রথম ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল আমাদেরই রিসার্চ টিম করেছিল। ডিসিজিআই অনুমোদনের পর ভ্যাকসিনটি এখন রাজ্য তথা দেশে দেওয়া হচ্ছে। এবার আমরা বাংলার একটি সরকারি কেন্দ্র ও দু’টি প্রাইভেট হাসপাতালে স্পুটনিক লাইট-এর সিঙ্গল ডোজ কোভিড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করাতে চলেছি।’
অন্যান্য করোনা টিকায় যেমন ট্রায়ালের স্বেচ্ছাসেবকদের একাংশকে প্ল্যাসিবো বা স্যালাইন ওয়াটার দেওয়া হয়, এই পরীক্ষায় তা হবে না। অংশগ্রহণকারীরা সকলকেই পাবেন ভ্যাকসিন। একদল পাবেন রাশিয়ান স্পুটনিক লাইট। অন্যদল রুশ ফর্মুলাতেই ভারতীয় কোম্পানির তৈরি স্পুটনিক লাইট। রাশিয়ায় এই টিকার কার্যকারিতা ৭৯.৪ শতাংশ। ভ্যাকসিনটি দেশীয় সংস্থাগুলি তৈরি করবে বলে মূল্যও কম হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।