রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

কোভিড পর্বেও রাজ্যে বিধানসভার উন্নয়নে মঞ্জুর ৮৫৫ কোটি টাকা

September 4, 2021 | 2 min read

ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের উন্নয়নকে পাখির চোখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋণের বোঝা ও কেন্দ্রের তরফে প্রাপ্য ঠিকমতো না পেলেও উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলায় স্থায়ী সম্পদ তৈরিকে বরাবর প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। তাঁর এই মনোভাবকে প্রাধান্য দিয়েই বিধায়কদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের ক্ষেত্রে হাত উপুড় করেছে নবান্ন। এমনকী, কোভিড পরিস্থিতিতে বাড়তি আর্থিক চাপ সত্ত্বেও এক্ষেত্রে আপস করেনি সরকার। তাই গত পাঁচ বছরে এই খাতে বাজেট বরাদ্দের ৯৬ শতাংশ টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্য পরিকল্পনা দপ্তর। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৮৫৫ কোটি। নোডাল অফিসার তথা জেলাশাসকদের (কলকাতার ক্ষেত্রে পুর কমিশনার) কাছে এই টাকা যায়। যার মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ৮২২ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কোভিডের কারণে গত আর্থিক বছর থেকে সাংসদ তহবিলের টাকা বরাদ্দ স্থগিত রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এনিয়ে দলমত নির্বিশেষে সাংসদরা ক্ষোভ জানালেও তাতে কর্ণপাত করেনি কেন্দ্র। সেই নিরিখে মমতার সরকার বিধানসভা ভিত্তিক উন্নয়নের জন্য টাকা বরাদ্দে কোনও খামতি রাখেনি, বলছেন আধিকারিকরাই।


তবে মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা নিচুতলায় কাজের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত পাঁচ বছরের হিসেবকে সামনে রেখে পরিকল্পনা দপ্তরের রিপোর্ট বলছে, মোট পাওয়া অর্থের মাত্র ৫২.১২ শতাংশ, অর্থাৎ ৪২৮ কোটি ৪৫ কোটি টাকা এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে। তবে দুই ২৪ পরগনা ও কলকাতার ভূমিকা এক্ষেত্রে যথেষ্ট খারাপ। নবান্নের পদস্থ কর্তারা এজন্য কর্মীদের একাংশের গড়িমসির দিকে আঙুল তুলেছেন। পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিধায়কের উদ্যোগহীনতাকেও দায়ী করছেন তাঁরা। এবিষয়ে বিধানসভার স্থায়ী কমিটির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এবিষয়ে ঠিকাদারদের ভূমিকাও রয়েছে আতসকাচের তলায়। কারণ, বিধায়কদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ ও তার হিসেবের উপর নজরদারি করাই এই কমিটির প্রধান কাজ। উল্লেখ্য, এই খাতে বিধায়ক পিছু বছরে দু’ কিস্তিতে মোট ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে সরকার। 


পরিকল্পনা দপ্তরের তৈরি ওই রিপোর্ট বলছে, গত পাঁচ বছরে ২৯৫ জন বিধায়ক মোট ২০ হাজার ৯৪৯টি প্রকল্প জমা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে ৬৭১.৪৭ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দিলেও তার সবটায় সবুজ সঙ্কেত মেলেনি জেলা স্তরে। ৫৮৬ কোটি টাকার প্রকল্পে সিলমোহর মিলেছে সেখানে। বাস্তবে টাকা ছাড়া হয়েছে ৫৫৭ কোটির কাছাকাছি। এর মধ্যে ১৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ হয় অর্ধসমাপ্ত রয়েছে, নতুবা শুরুই হয়নি। 


বিধানসভার কমিটির নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকির কাছে এই পরিসংখ্যান মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী বা সরকারের শীর্ষ স্তরে এবিষয়ে সদিচ্ছা স্পষ্ট। কিন্তু টাকা খরচের ক্ষেত্রে নিচুতলায় সমস্যা রয়েছে। কেন, তা খতিয়ে দেখতে হবে। এবিষয়ে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিধায়কদেরও সচেতন থাকতে হবে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #West Bengal Assembly, #Allocation

আরো দেখুন