উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

বিধ্বংসী ধ্বস পাহাড়ে, প্রাণ হারালেন বৃদ্ধ

September 5, 2021 | 2 min read

ধসের জেরে বাড়ি চাপা পড়ে বেঘোরে প্রাণ হারালেন এক বৃদ্ধ। শনিবার ভোরে কালিম্পং জেলার লোয়ার দালেব এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম বীরবাহাদুর মানগের(৭৬)। শুধু তাই নয়, ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে দু’টি পরিবারের ন’জন সদস্যকে। এনিয়ে দু’দিনে দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭টি বাড়ি। দুই জেলার প্রশাসনের আধিকারিকররা বলেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। নিয়ম মেনে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। 

ধস কবলিত লোয়ার দালেব এলাকা পেডং ব্লকে অবস্থিত। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে আচমকাই ওই এলাকায় ধস নামে। হুড়মুড়িয়ে পাহাড়ের মাটি, বালি, পাথার ওই বাড়ির উপর পড়ে। ওই বাড়ি বাঁশ, কাঠ ও টিন দিয়ে তৈরি ছিল। তাতে  চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। পাশের আরও দু’টি বাড়ি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে পুলিস ও জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিপজ্জনক বাড়িগুলির সদস্যদের নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ওই বৃদ্ধ বাড়িতে একাই থাকতেন। ধসের জেরে তিনি ঘুমের ঘোরেই প্রাণ হারালেন। 

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধসে মৃত ওই বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যদের দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, মৃত ওই বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ চলছে। তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য থাকলে ক্ষতিপূরণের অর্থ পাবেন। পাশাপাশি, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা দু’টি পরিবারের সদস্যদের পাশের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে পরিবারগুলিকে ত্রাণ হিসাবে নগদ ১০০০ টাকা করে এবং  চাল, চিড়া, গুড় ও ত্রিপল দেওয়া করা হয়েছে। 
ধসের জেরে এদিন লোয়ার দালেব এলাকা দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ ছিল। যার ফলে, স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পুলিস ও প্রশাসনের তৎপরতায় দুপুরের আগেই এলাকার রাস্তা থেকে ধস সরানো হয়। গ্রামীণ রাস্তায় যোগাযোগ ব্যবস্থা চাঙা করে তোলা হয়। তবে, গত ২৪ ঘণ্টায় স্থানীয় এলাকায় তেমন বৃষ্টি হয়নি। তারপরও এখানে ধস নামায় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের একাংশ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জোর বৃষ্টি না হলেও কয়েকদিন আগে টানা চার থেকে পাঁচ দিন বৃষ্টি হয়েছে। সেই বৃষ্টির জল হয়ত লোয়ার দালেবে পাহাড়ের কোনও অংশে দাঁড়িয়ে ছিল। সম্ভবত এজন্যই এলাকায় ধস নেমেছে। স্বাভাবিকভাবেই এধরনের ঘটনা আরও ঘটতে পারে বলে মনে হচ্ছে। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক অবশ্য বলেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দল প্রস্তুত রয়েছে। ধস নামার সঙ্গে সঙ্গেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 শুধু কালিম্পং নয়, দার্জিলিং পাহাড়েও ধস অব্যাহত রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন পুলবাড়ি ব্লকের রঙ্গিত-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার ধসে মিরিক ব্লকের সৌরেনি-২ পঞ্চায়েতে একটি, পুলবাজারের লোয়ার রেলিং ও আপার রেলিংয়ে ১০টি এবং চংথং ও গোখে পঞ্চায়েত এলাকায় একটি করে দু’টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kalimpong, #Deaths

আরো দেখুন