শীঘ্রই টিকাকরণ, ১২ ঊর্ধ্বদের আধার কার্ড করানোর তোড়জোড় রাজ্যের
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে জোরকদমে। শীঘ্রই বাজারে এসে পড়বে ১২ বছর ঊর্ধ্বদের করোনা ভ্যাকসিন। টিকাকরণের পদ্ধতি সেই একই। অর্থাৎ, প্রথমে আধার নম্বর দিয়ে কো-উইন পোর্টালে নাম নথিভুক্তি। তারপর শরীরে বাঁধা পড়বে সুরক্ষা কবচ। অথচ, বাংলার ২৬ শতাংশ স্কুল পড়ুয়ার এখনও আধার কার্ডই নেই! হাতে বেশি সময় নেই। এই পরিস্থিতিতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। যত দ্রুত সম্ভব স্কুলগুলিতে শিবির বসিয়ে ১২ ঊর্ধ্বদের আধার কার্ড করানোর প্রাথমিক তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। শুধু করোনা টিকা নয়, একই কারণে রাজ্যের তিন লক্ষ ছাত্রী এখনও কন্যাশ্রীর সুবিধা পায়নি। সরকারি উদ্যোগে এই শিবির বাস্তবায়িত হলে কোভিড সমস্যার মধ্যে হাতে চাঁদ পাবে সেই ছাত্রীরাও। কীভাবে ছাত্রছাত্রীদের দ্রুত আধার কার্ড দেওয়া হবে, তার রূপরেখা নির্ধারণের দায়িত্বে রয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। আধার কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ, ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (ইউআইডিএআই) সঙ্গে বৈঠক করেছেন দপ্তরের শীর্ষ কর্তারা।
করোনার সংক্রমণের কারণে স্কুল বন্ধ। চোখ রাঙাচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে দুর্গাপুজোর পরে অক্টোবর মাসে স্কুল খোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই অবস্থায় লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার আধার কার্ড করানোর কর্মসূচি নেওয়া একটি বড় পদক্ষেপ। জানা গিয়েছে, সরকারি, সরকার পোষিত ও বেসরকারি স্কুলগুলিতে কীভাবে সেই কাজ হবে, তা নিয়েই ইউআইডিএআই-এর সঙ্গে বৈঠক করেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। ক্যাম্পের সংখ্যা, সেগুলি স্কুলেই করা হবে কি না, কী কী পরিকাঠামো ও কতজন কর্মী প্রয়োজন—এসব নিয়ে আরও আলোচনা অবশ্য এখনও বাকি। তবে যত দ্রুত সম্ভব গোটা প্রক্রিয়াটি শুরুর চেষ্টায় আছে রাজ্য সরকার।
আধারের বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের অগ্রাধিকার চাইছেন শিক্ষকরাও। রাজ্যের অন্যতম শিক্ষক সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি অব হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনের জন্য আধার কার্ড করানো অত্যন্ত জরুরি। শুধু তাই নয়, একারণে অন্যান্য একাধিক সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বহু পড়ুয়া। করোনা সংক্রমণের পর থেকে আধার করাতে পারেনি বহু ছাত্রছাত্রী। সেই গেরোয় আটকে রয়েছে প্রায় তিন লক্ষ ছাত্রীর কন্যাশ্রীর টাকা। এছাড়াও হস্টেলে থাকা এবং বৃত্তির জন্য আধার লাগে। তা না থাকার কারণে বহু পড়ুয়ার বৃত্তির টাকা আটকে রয়েছে। চন্দনবাবু অবশ্য মানছেন, চাইলেই নিমেষে সব পড়ুয়ার আধার কার্ড করানো সম্ভব নয়। ফলে ১২ ঊর্ধ্বদের টিকাকরণের পাশাপাশিই সেই কাজ চালিয়ে যেতে হবে। বাংলার পড়ুয়াদের মুখ চেয়ে রাজ্য অবিলম্বে আধার ক্যাম্প শুরু করুক বলে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।