ডিসেম্বর থেকে অনলাইনেই মিলবে গাড়ির পারমিট
রাজ্যবাসীকে স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেবেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো একাধিক উদ্যোগও নিয়েছেন। তাঁর দেখানো পথে হেঁটে এবার এবার এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিল পরিবহণ দপ্তর। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যজুড়ে যাবতীয় বাণিজ্যিক গাড়ির নয়া পারমিট এবং তার পুনর্নবীকরণ প্রক্রিয়া হবে অনলাইনে। অভিযোগ, এতদিন রাস্তায় নামার সরকারি ছাড়পত্র পেতে গাড়ি মালিকদের রীতিমতো গলদঘর্ম হওয়ার জোগাড় হতো। রমরমা ছিল দালালদেরও। সেই অবস্থা বদলাতে সম্প্রতি ‘অনলাইন পারমিট’ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেছেন পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব রাজেশ সিনহা।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, পারমিট নিয়ে দালাল চক্র ও দুর্নীতির অবসান ঘটাতেই গোটা প্রক্রিয়াটি অনলাইনে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিবহণ দপ্তরের একাধিক ঘুঘুর বাসা ভাঙতে আগামী দিনে এ ধরনের আরও আধুনিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দপ্তর সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলেই গাড়ির একাধিক কাগজপত্র সংক্রান্ত কাজ অনলাইন করে দেওয়া হয়েছে। ২০২৬-১৭ অর্থবর্ষ থেকেই ‘বাহন’ এবং ‘সারথি’ নামে দু’টি সফটওয়্যার চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যার মাধ্যমে গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেতে আবেদনকারীকে আর সরকারি অফিসে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে না। এবার পারমিটের ক্ষেত্রেও অনলাইন প্রক্রিয়া চালু হলে আঞ্চলিক দপ্তরগুলিতে ভিড় অনেক কমবে।
করোনা আবহে সংক্রমণ রুখতে যা অত্যন্ত কার্যকরী বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, যে কোনও বাণিজ্যিক গাড়ি নির্দিষ্ট রুটে নামানোর জন্য পরিবহণ দপ্তরের কাছে পারমিটের জন্য আবেদন করতে হয়। বিভাগীয় কর্তারা তা খতিয়ে দেখে ১৮০ দিনের মধ্যে ছাড়পত্র দেয়। বিভিন্ন গাড়ির পারমিট ফিও আলাদা আলাদা। মেয়াদ থাকে পাঁচ বছর।এদিকে, অনলাইন পারমিট ব্যবস্থা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলি। অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় স্বাগত জানিয়েছেন এই পদক্ষেপকে। তাঁর কথায়, আগে চার হাজার টাকার পারমিট বের করতে ৪০ হাজার টাকা দালালকে দিতে হতো।
শুধু তাই নয়, দূরদূরান্ত থেকে আবেদনকারীরা হাজিরা দিতেন আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরে। গোটা ব্যবস্থা অনলাইন হয়ে গেলে দালালদের খপ্পর থেকে মুক্তি মিলবে। পাশাপাশি বাড়িতে বসে পারমিটের আবেদনও করা যাবে। যদিও এতে বেশকিছু অসুবিধার কথা জানিয়েছেন সিটি সুবারর্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা। তাঁর দাবি, গোটা প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় ফি মকুব বা এধরনের কিছু সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমস্যা হবে।Ads by