তেলের মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী অয়েল বন্ড? নির্মলার মিথ্যা ফাঁস আরটিআইয়ে
আরও একবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের মিথ্যাচার ফাঁস করলেন তৃণমূল নেতা তথা আরটিআই কর্মী সাকেত গোখলে। পেট্রল ও ডিজেলের বেলজিয়াম মূল্যবৃদ্ধির জন্য ইউপিএ সরকারকে কাঠগড়ায় দুলে গত ১৬ আগস্ট অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, ইউপিএ সরকার অয়েল বন্ড জারি করেছিল, যার জেরে তেলের দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, সরকারকে এই বন্ডের জেরে টাকা দিতে হয় ৷ ২০০৫-২০১০ সালের মধ্যে তৎকালীন ইউপিএ সরকার তেল সংস্থাগুলিকে অয়েল বন্ড জারি করেছিল ৷ এর জেরে সেই সময় তৎকালীন সরকারকে সংস্থাগুলি নগদ সাবসিডি দিতে হয়নি এবং আগামী কয়েক বছরে কিস্তিতে দেওয়ার কথা ছিল ৷
অর্থমন্ত্রী এই বিবৃতির পরেই অর্থমন্ত্রকের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়ে আরটিআই করেন সাকেত গোখলে। অর্থমন্ত্রকের তরফ থেকে সেই আরটিআই-এর উত্তর দিয়ে বলা হয়েছে, ২০১৫- ১৬ অর্থবর্ষ থেকে এই বিষয়ক কোন বকেয়াই পরিশোধ করেনি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। অর্থাৎ মিথ্যাচার করছেন অর্থমন্ত্রী। তেলের এই বিপুল দামের পিছনে কোন ভাবেই দায়ী নয় অয়েল বন্ডের বকেয়া। বিষয়টি নিজে টুইট করে জানিয়েছেন সাকেত গোখলে।
অয়েল বন্ড এক ধরনের স্পেশ্যাল সিকিউরিটিজ যা সরকারের তরফে তেল সংস্থাগুলি যেমন হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম, ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়ামকে ক্যাশ সাবসিডি হিসেবে দেওয়া হয় যাতে সাধারণের উপর তেলের দামের চাপ না পড়ে ৷ অয়েল বন্ড ১৫-২০ বছরের জন্য হয় ৷ তেল সংস্থাগুলিকে এই বন্ডের উপরে সুদও দেওয়া হয় ৷
নির্মলা সীতারমন দাবি করেছিলেন, ইউপিএ সরকার প্রায় ১.৪৪ লক্ষ কোটি টাকার অয়েল বন্ড ইস্যু করেছিল ৷ ২০১৪-১৫ সালে অয়েল বন্ডের ১.৩৪ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া ছিল ৷ মোদী সরকার ৭০,১৯৫ কোটি টাকার সুদ দিয়েছে ৷ পাশাপাশি মোদী সরকাররে ৩৫০০ কোটি টাকা দিয়ে হয়েছে অয়েল বন্ডের জন্য ৷ ২০২৬ পর্যন্ত সরকারকে ৩৭০০০ কোটি টাকা সুদ দিতে হবে ৷ ২০২৬ পর্যন্ত সরকারকে ১.৩০ লক্ষ কোটি টাকা দিতে হবে ৷
অর্থাৎ বিজেপি সরকারকে ইউপিএ সরকারের অয়েল বন্ডের বকেয়া মেটাতে হচ্ছে বলেই, তেলের দাম কমাতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার।
এবার সাকেত তথ্য দিয়ে দেখালেন অয়েল বন্ডের সুদ ৯৯৮৯ কোটি। আর পেট্রল, ডিজেল থেকে সরকারের আয় ৩.৩৫ লক্ষ কোটি। সেক্ষেত্রেও ধোপে টিকছে না অর্থমন্ত্রীর যুক্তি। সাকেত প্রশ্ন তুলেছেন, এটা স্পষ্ট যে পেট্রল, ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে অয়েল বন্ডের কোন যোগ নেই। বিশ্ব বাজারে অপরিশেধিত তেলের দাম কমা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীকে বেশি কর দিতে বাধ্য করছে। এই টাকা যাচ্ছে কোথায়!