অনুমতি ছাড়াই রাজ্যে সিবিআই তদন্ত কীভাবে? কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের
আরও তীব্র হচ্ছে মোদী বনাম মমতার লড়াই। রাজ্যের অনুমতি ছাড়া সিবিআই কী করে পশ্চিমবঙ্গে তদন্ত করছে? সিবিআই কি আইন ভাঙছে? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রের কাছে এই মর্মে জবাব চেয়ে সোমবার নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে যাতে মামলাটির দ্রুত শুনানি হয়, তার জন্য রাজ্যকে শীর্ষ আদালতের কাছে বিশেষভাবে ‘উল্লেখ’ (আইনি ভাষায় মেনশন) করার অনুমতিও দিয়েছেন বিচারপতি নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ।
নিজেদের পক্ষে যুক্তি মজবুত করতে সংবিধানের ১৩১ অনুচ্ছেদকে অস্ত্র করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। একইসঙ্গে সিবিআই তথা কেন্দ্রকে চেপে ধরতে পৃথক একটি ‘ইন্টারিম অ্যাপ্লিকেশন’ও করা হয়েছে। যেখানে রাজ্যের প্রশ্ন, সিবিআই কী করে স্বতপ্রণোদিত এফআইআর করে মামলা শুরু করে দিচ্ছে? আগামী ২২ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টের কম্পিউটার জেনারেটেড তারিখ দেখালেও রাজ্য তার আগেই শুনানির জন্য আবেদন করবে বলে জানা গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নোটিস পেয়ে মোদি সরকারকে শীঘ্রই জবাব দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের সওয়াল, যে আইনের (দিল্লি স্পেশাল পুলিস এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৪৬) ভিত্তিতে সিবিআইয়ের জন্ম, তার ৬ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, রাজ্যের অনুমোদন ছাড়া কোনও ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না সিবিআই। এটা তাদের এক্তিয়ারেই নেই। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সিবিআইকে তদন্ত করতে কোনও অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে আদালত নির্দেশ দিলে আলাদা কথা।
সেক্ষেত্রে তদন্ত হতেই পারে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ ছাড়াই সিবিআই স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর করে মামলা শুরু করে দিচ্ছে বলে রাজ্যের অভিযোগ। তাই সংবিধানের নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ এবং দিল্লি স্পেশাল পুলিস এস্টাবলিশমেন্ট আইনকে হাতিয়ার করে মামলা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের হয়ে এদিন সওয়াল করেছেন কপিল সিবাল, সিদ্ধার্থ লুথরার মতো আইনজীবী। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের হয়ে উপস্থিত ছিলেন সুখেন্দুশেখর রায় ও সুহান মুখোপাধ্যায়। মামলায় রাজ্যের সওয়াল শুনেই কেন্দ্রের জবাব চেয়ে নোটিস ইস্যুর নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। মামলাটি গৃহীত হওয়ায় আশার আলো দেখছে রাজ্য। এখন দেখার কী জবাব দেয় খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তর। কারণ, সিবিআই তাঁরই হাতে থাকা ডিওপিটি (ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং)র অধীন। তাই এই মামলা পরোক্ষে মোদী বনাম মমতার বললেও রাজনৈতিকভাবে ভুল হয় না বলেই ওয়াকিবহাল মহলের মত।