পঞ্চায়েতের অনাস্থা ভোট চলাকালীন ঢুকে পরে বিক্ষোভের মুখে বিজেপি সাংসদ
পঞ্চায়েতের অনাস্থা ভোট ঘিরে অশান্তি। শান্তিপুরের বেলগড়িয়ায় গিয়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার (Jagannath Sarkar)। অভিযোগ, তাঁকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন তৃণমূল কর্মীরা। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও সাংসদকে ঘিরে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে। শেষমেশ নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতায় অশান্তি এড়িয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন জগন্নাথ সরকার। জখম হয়েছেন বিজেপির টাউন সভাপতি। তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে অশান্তির জন্য বিজেপি সাংসদকেই দায়ী করছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃ্ত্ব।
শান্তিপুর (Santipur)বেলগড়িয়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অনাস্থা ভোট চলছিল বুধবার। তা ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল যথেষ্ট। পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে নির্দিষ্ট এলাকাজুড়ে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স, RAF. ঠিকমতোই চলছিল ভোটাভুটি। কিন্তু অভিযোগ, আচমকাই বেলগড়িয়ার পঞ্চায়েত অফিসে হাজির হন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনি গাড়ি থেকে নেমে সোজা পঞ্চায়েত অফিস অর্থাৎ যেখানে ভোট চলছিল, সেখানে চলে যান। তাতেই বাধা দেন তৃণমূল (TMC) কর্মীরা। কীভাবে ভোটের বিধি ভেঙে, পুলিশের সামনে দিয়ে সাংসদ পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে পড়লেন, সেই প্রশ্ন তুলে জগন্নাথ সরকারকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন। প্রতিহত করতে ছুটে আসেন বিজেপির (BJP) স্থানীয় নেতা, কর্মীরা। আটকে পড়েন সাংসদ। শেষমেশ পুলিশ ও তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে জগন্নাথবাবুকে জনতার ভিড় থেকেই বের করে আনেন।
ঘটনায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে পড়ে আহত হন শান্তিপুরের টাউন বিজেপি সভাপতি বিপ্লব কর। তিনি অভিযোগ করেন, বন্দুকের বাঁট দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়, তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। কিন্তু এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। শান্তিপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিমাইচন্দ্র বিশ্বাসের দাবি, ”আমরা সবাই ভোটকেন্দ্রের বাইরে নির্দিষ্ট দূরত্বে বসেছিলাম নিয়ম মেনে। বিজেপি সাংসদ নিজেই ভোটকেন্দ্রে ঢুকে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছেন। আমাদের বিরুদ্ধে অকারণে মারধরের অভিযোগ করা হচ্ছে।” ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা ৩৪ নং জাতীয় সড়কে শান্তিপুর বাইপাস অবরোধ করে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ”রানাঘাট লোকসভার সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও বিধায়ক পার্থদা কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত। ৯ জন আহত। ৩ জন হাসপাতালে। এটাই বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলার প্রকৃত ছবি। আজ উপনির্বাচনের সময় এটাই বিরোধীদের অবস্থা।”
বেলগড়িয়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১৫ টি আসন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৬ টি করে আসন পেয়েছিল বিজেপি ও নির্দল। ৩টি আসন পায় তৃণমূল। পরে নির্দল সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দিলে তাদের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯। বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। এবার একুশের নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেন। তার জেরে পঞ্চায়েতে বিজেপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭, তৃণমূলের ৮। তাতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে বিজেপি। আজ সেই অনাস্থা ভোট ছিল। কিন্তু তৃণমূলের সদস্যরা অনুপস্থিত থাকায় তা শেষপর্যন্ত বাতিল হয়ে যায়।