তিন ছাত্রের বহিষ্কারে স্থগিতাদেশ, হাই কোর্টের রায়ে ধাক্কা খেল বিশ্বভারতী
কলকাতা হাই কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল বিশ্বভারতী (Visva Bharati) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সাসপেন্ড হওয়া ৩ পড়ুয়ার শাস্তি প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাঁদের ক্লাসে ফেরাতে হবে। বৃহস্পতিবার থেকেই তাঁরা যেন ক্লাস করতে পারে, তা দেখতে হবে। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) বিচারপতি রাজশেখর মান্থা অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে এসবই জানিয়েছেন। আরও বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। হাই কোর্টের এই নির্দেশে স্বভাবতই খুশি সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়ারা। তাঁরা ফলের রস খেয়ে অনশন ভেঙেছেন।
সমস্যার শুরু চলতি বছরের জানুয়ারিতে। অর্থনীতি এবং রাজনীতি বিভাগের লাগাতার ছাত্র বিক্ষোভ, উপাচার্য ঘেরাওকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠলেও সহযোগিতা করছে না রাজ্য। এই অভিযোগে এবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ বিশ্বভারতী (Visva Bharati University)। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবার ৩৮ পাতার রিট পিটিশন দাখিল করল আদালতে। আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হতে পারে শুনানি। ফাল্গুনী পান, সোমনাথ সৌ এবং হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিভাগের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীকে সাসপেন্ড (Suspend) করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ ছিল, উপাচার্যের (VC) সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন এঁরা। সেই কারণে সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত। পরবর্তী সময়ে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও করেন উপাচার্য। এর প্রতিবাদে কলকাতা হাই কোর্টে পালটা মামলা করেন ছাত্রছাত্রীরা।রাজ্যের বিরুদ্ধে পালটা অসহযোগিতার অভিযোগেও উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে। তিনি এই মামলার অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে জানান, ওই ৩ পড়ুয়াকে অবিলম্বে ক্লাসে ফেরাতে হবে। এ নিয়ে তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, ”লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাসপেনশনের শাস্তি অনেক বড় শাস্তি।” তবে পড়ুয়াদের সাসপেনশন তাঁদের ক্লাসে ফেরানোর জন্য একটি শর্তও দিয়েছেন বিচারপতি। এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যে ছাত্রদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। স্বাভাবিক পঠনপাঠনের পরিবেশ ফেরাতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এদিনের শুনানিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আচরণ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ”আপনি নানা বিষয়ে যেসব মন্তব্য করছেন, তা করতে পারেন না। যদি মনে করেন যে আপনি আইনের ঊর্ধ্বে, তাহলে কিন্তু আদালত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে।” উপাচার্যের উদ্দেশে তাঁর আরও পরামর্শ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের রাজনীতির মধ্যে টানবেন না। হাই কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন এই নির্দেশে স্বভাবতই খুশি সাসপেন্ড হওয়া ৩ পডুয়া।আন্দোলনে তাঁদের বড় জয় বলেই মনে করছেন।