ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশকেই রেলের বরাত, আবার ব্রাত্য বাংলা
পুজোর আগে সস্তার ইকনমি থার্ড এসি কোচে চেপে বাংলার মানুষের সফর একপ্রকার অনিশ্চিত। দূরপাল্লার ট্রেন যাত্রাকে আরও সাশ্রয়ী করার জন্য ইতিমধ্যেই ৫০টি নতুন ইকনমি থার্ড এসি কোচ তৈরি করেছে কাপুরথালার রেল কোচ ফ্যাক্টরি (আরসিএফ)। কিন্তু সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ৫০টি কোচ তৈরি হলেও এখনও বাংলা একটিও এহেন কোচ পায়নি। আগামী বছর গুরুত্বপূর্ণ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রেলের যাবতীয় নজর আপাতত যোগীরাজ্যের দিকেই। এবং যার ফলে ট্রেন যাত্রীদের একটি বড় অংশ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের বাংলার সঙ্গে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইকনমি এসি কোচ আমরা পাইনি। যখন তা আমাদের হাতে আসবে, তখন সেইমতো পরিকল্পনা করা হবে।’ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নীরজ কুমারও জানিয়েছেন, ‘এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব রেল ইকনমি এসি কোচ পায়নি।’ উল্লেখ্য, দূরপাল্লার ট্রেনের অন্যান্য থার্ড এসি কোচের তুলনায় এই ইকনমি থ্রি টিয়ার এসি কোচের যাত্রীভাড়া প্রায় আট শতাংশ কম। শুধু তাই নয়। এই কোচগুলির যাত্রীধারণ ক্ষমতা অন্য থার্ড এসি কোচের তুলনায় বেশি। ৭২টির পরিবর্তে ইকনমি ক্লাস থার্ড এসি কোচে রয়েছে ৮৩টি আসন। দূরপাল্লার ট্রেনের নন-এসি স্লিপার কোচ তুলে দিয়ে তার জায়গায় ইকনমি থার্ড এসি কোচ বসানো যায় কি না, সেই চিন্তাভাবনাও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রেলমন্ত্রকে।
রেলের শীর্ষ কর্তাদের মত, তুলনায় কম খরচে সাধারণ যাত্রীদের এসি কোচে ভ্রমণ করানোর উদ্দেশ্যেই ইকনমি ক্লাসের উদ্ভাবন ঘটানো হয়েছে। ফলে যত বেশি এইসব কোচের ব্যবহার হবে, তত বেশি সাধারণ ট্রেনযাত্রী এর ফলে উপকৃত হবেন। আর এই পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলার কোনও জোনের এখনও পর্যন্ত ইকনমি থার্ড এসি কোচ না মেলার বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল।
যদিও রেল বোর্ডের শীর্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, এর মধ্যে বঞ্চনার কোনও বিষয় নেই। পর্যায়ভিত্তিতে দেশের সবক’টি জোনের হাতেই এই সস্তার এসি কোচ তুলে দেওয়া হবে। তবে রেল বোর্ড যতই ব্যাখ্যা দিক না কেন, রেলের আগামী পরিকল্পনাই বুঝিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রের নজর রয়েছে ভোটরাজ্য উত্তরপ্রদেশের দিকে। কীরকম? যেমন ইতিমধ্যেই প্রয়াগরাজ-জয়পুর এক্সপ্রেসে এই ইকনমি থার্ড এসি কোচের ব্যবহার শুরু হয়েছে। রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, খুব শীঘ্রই নিউ দিল্লি-লখনউ এসি স্পেশাল এবং লখনউ মেলে এই বন্দোবস্ত শুরু করা হবে। যদিও এর সঙ্গে ভোট-রাজনীতির কোনও সম্পর্ক মানতে চায়নি রেল বোর্ড। আসন সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ভাড়া কমানোর পাশাপাশিই ইকনমি থার্ড এসি কোচগুলিতে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে রেল।