এবার পুজোয় ‘দুয়ারেই কেনাকাটা’, জেনে নিন কিভাবে পাবেন এই সুবিধা
করোনা আবহে এবার এখনও জমেনি পুজোর (Durga Puja 2021) বাজার। সেই অর্থে ভিড়ভাট্টাও হচ্ছে না শপিং মল বা হকার বাজারে। কারণ পুজোর আগেই চোখ রাঙাচ্ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। সংক্রমণের আশঙ্কায় অনেকেই ভিড় ঠেলে গড়িয়াহাট-নিউ মার্কেটে কেনাকাটা করতে বেরতে ভয় পাচ্ছেন। পাছে পুজোর মুখে বিপত্তি ঘটে! তাঁদের জন্যই শহরের বহু আবাসনে স্টল সাজিয়েছে নামীদামি জামা-জুতো-শাড়ির বিপণিগুলো। একেবারে ‘দুয়ারে কেনাকাটা।’
পড়েছে হোর্ডিং। ঘর থেকে বেরিয়েই পুজোর শপিং (Shopping at Doorstep)। গাড়ি করে ভিড় ঠেলে ঘেমে নেয়ে পুজোর বাজারের কোনও ঝক্কি নেই। ফ্ল্যাটের দরজা ঠেলে দু’পা এগিয়েই ফাঁকায়-ফাঁকায় কেনাকাটা সেরে ফেলা যায়। ইতিমধ্যেই কলকাতার একাধিক অভিজাত আবাসনে শুরু হয়েছে পুজোর এই স্টল দেওয়ার রেওয়াজ। যা দেখে বাসিন্দাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে কেনাকাটার আগ্রহও।
পুজোর মাস দেড়েক আগে থেকেই দক্ষিণ কলকাতা (Kolkata) এবং বাইপাসের ধারের বড় বড় আবাসনে স্টল দিয়েছে জামা-কাপড়-জুতোর কোম্পানিগুলো। তাতে সেই আবাসনের বাসিন্দারা ভিড়ও জমাচ্ছেন ভালই। কোনও কোম্পানি স্টল রাখছে সাত দিনের জন্য, কেউ বা দিন দুয়েকের জন্য। নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে সময়। আর সেই সময়ই চলছে কেনাকাটা। থাকছে বিভিন্ন জিনিসের উপর ছাড়ও। যা দেখেই লোকে আরও আরও ভিড় করছেন। তবে এই কেনাকাটার সুযোগ থাকছে কেবলমাত্র সেই আবাসনের বাসিন্দাদের জন্যই। বাইরের কেউ দোকান দেখে ভিতরে ঢুকতে পারছেন না। মূলত সন্ধের দিকেই হচ্ছে কেনাকাটার ভিড়।
বছর চারেক আগে বাইপাসের ধারের এক অভিজাত আবাসনে প্রথম স্টল দেয় একটি পোশাকের প্রস্তুতকারী সংস্থা। সেখানে বেচাকেনা ভালই হয়। তাই পরের বছর থেকে অন্যান্য আবাসনেও জামা-জুতোর কোম্পানিগুলো স্টল দিতে শুরু করে। গতবছর করোনা পরিস্থিতিতে বহু মানুষ শপিং মলে বা অন্যত্র কেনাকাটা করতে বেরননি। আবাসনের বাসিন্দারাও তাঁদের মধ্যে পড়েন। আর এই বড় অংশের ক্রেতার কথা মাথায় রেখে ‘দুয়ারে কেনাকাটা’ চালু হয়েছে। ক্রেতারাও খুশি। আর বেচাকেনা ভাল হওয়ায় খুশি কোম্পানিগুলোও।
কসবার কাছে অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা শতরূপা ঘোষালের কথায়, “গতবছর থেকে এখনও ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছে। বাইরে সেভাবে বেরনোর সময় থাকে না। যখন তখন অফিসের ফোন। কিন্তু পুজোর শপিং তো করতে হবে। এবার আমাদের আবাসনে জামা-জুতো সবকিছুরই আউটলেট খুলেছে। সেখান থেকেই এবার কেনাকাটা করব বলে ঠিক করেছি।” বাইপাসের ধারে আরেক আবাসনে জুতোর স্টলের কর্মচারীর কথায়, “বিক্রি খুব একটা খারাপ নয়। দিন তিনেকের জন্য খোলা হয়েছিল। এত বড় আবাসনে প্রায় সাতশো পরিবার থাকে। তাঁদের কুড়ি শতাংশ পরিবারের লোকও যদি আমাদের এই স্টল থেকে কেনাকাটা করেন তাহলেই আমাদের পুষিয়ে যাবে। আবারও পুজোর আগে দু’বার বসবে স্টল।”
কিন্তু যে কেউ কি এইসব আবাসনে স্টল দিতে পারেন? ওই আবাসনের পরিচলন কমিটির এক সদস্য জানান, “যাঁরা এই আবাসনে স্টল দিতে চান, তাঁরা আমাদের কমিটির কাছে আবেদন করেন। আমরা বাসিন্দাদের সবরকম নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখে কোম্পানির রেকর্ড দেখে এখানে দোকান দেওয়ার অনুমতি দিই। কারা কবে কোন দোকান কতদিনের জন্য দেবেন, তা বাসিন্দাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানিয়ে দেওয়া হয়।”