গোটা দেশের অর্ধেক কৃষক পরিবার ঋণগ্রস্ত, সমীক্ষায় উঠে এলো দুর্দশার ছবি
দেশের কৃষিজীবী পরিবারগুলির অর্ধেকই ঋণগ্রস্ত (in debt)। ২০১৯ সালে প্রতিটি পরিবারের গড় ঋণ ছিল ৭৪ হাজার ১২১ টাকা। ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকাল অফিস (এনএসও)-র সমীক্ষায় একথা জানা গিয়েছে। কৃষিজীবী পরিবারগুলি মোট ঋণের ৬৯.৬ শতাংশ নিয়েছে ব্যাঙ্ক, কো-অপারেটিভ এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থা থেকে। ২০.৫ শতাংশ ঋণ নেওয়া হয়েছে পেশাদার ঋণদাতাদের থেকে। মোট ঋণের ৫৭.৫ শতাংশ নেওয়া হয়েছে কৃষিকাজের জন্য।
এনএসও জানিয়েছে, কৃষিজীবী পরিবারগুলির ৫০.২ শতাংশই ঋণগ্রস্ত। গড়ে প্রতিটি পরিবারের ঋণের পরিমাণ ৭৪ হাজার ১২১ টাকা। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কৃষিজীবী পরিবারগুলিকে নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়। তাদের হাতে কী পরিমাণ জমি ও ক’টি গবাদি পশু আছে জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। এনএসও জানিয়েছে, ২০১৮-১৯ সালের আর্থিক বছরে প্রতিটি কৃষিজীবী পরিবারের মাসিক আয় ছিল ১০ হাজার ২১৮ টাকা। তার মধ্যে মজুরি হিসাবে পাওয়া যেত ৪০৬৩ টাকা। শস্য উৎপাদন করে পাওয়া যেত ৩৭৯৮ টাকা। পশুপালন করে মিলত ১৫৮২ টাকা। কৃষি ব্যতীত অন্য কাজ করে পাওয়া যেত ৬৪১ টাকা। জমি লিজ দিয়ে মিলত ১৩৪ টাকা।
সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, দেশে কৃষিজীবী পরিবারের সংখ্যা ৯.৩ কোটি। তাদের মধ্যে অন্যান্য পশ্চাৎপদ শ্রেণির মানুষ আছেন ৪৫.৮ শতাংশ, তফসিলী জাতির মানুষ আছেন ১৫.৯ শতাংশ, তফসিলী উপজাতির মানুষ আছেন ১৪.২ শতাংশ এবং অন্যরা আচ্ছেন ২৪.১ শতাংশ।
গ্রামাঞ্চলে বাস করে অথচ কৃষির সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন পরিবারের সংখ্যা ৭.৯৩ কোটি। গ্রামে বসবাসকারী পরিবারগুলির মধ্যে ৮৩.৫ শতাংশের হাতে জমি আছে এক হেক্টরের কম। মাত্র ০.২ শতাংশের জমির পরিমাণ ১০ হেক্টরের বেশি।
অপর একটি রিপোর্টে এনএসও জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ জুনের হিসাব অনুযায়ী গ্রামাঞ্চলে ৩৫ শতাংশ পরিবার ছিল ঋণগ্রস্ত। তাদের মধ্যে কৃষিজীবী পরিবার ৪০.৩ শতাংশ এবং অন্যান্য পেশায় যুক্ত পরিবার ২৮.২ শতাংশ। শহরে ২২.৪ শতাংশ পরিবার ঋণগ্রস্ত। তাদের মধ্যে ২৭.৫ শতাংশ পরিবার স্বনিযুক্ত। অন্যান্য ঋণগ্রস্ত পরিবার আছে ২০.৬ শতাংশ।
২০১৮ সালে গ্রামীণ ঋণগ্রস্ত পরিবারগুলির মধ্যে ১৭.৮ শতাংশ সরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল। শহরে ঋণগ্রস্তদের মধ্যে সরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল ১৪.৫ শতাংশ। ওই সময় গ্রামে ১০.২ শতাংশ পরিবার বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল। শহরে বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল ৪.৯ শতাংশ পরিবার।