করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা, সামসেরগঞ্জ-জঙ্গিপুরের প্রচারে যাচ্ছেন না মমতা?
বাংলায় ফের একবার ভোটের দামামা! ভবানীপুর সহ বাংলার আরও দুই কেন্দ্রে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে বাকি দুই কেন্দ্রের থেকে গোটা বাংলার নজর ভবানীপুরের (Bhabanipur) দিকে।
কারণ উপনির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর কাছে হেরেও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ করছেন মমতা। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে জিতে আসতে হবে ছয়মাসের মধ্যে।
আর সেই কারনে ফের একবার ভোটের ময়দানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত আরও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রেস্টিজিয়াস ফাইট।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর উপনির্বাচনে ভোট রয়েছে। সেদিন রাজ্যে আরও দুই কেন্দ্রে ভোট রয়েছে। নির্বাচন হবে জঙ্গিপুর (Jangipur) এবং সামসেরগঞ্জ (Samserganj)। গত বিধানসভা আসনে এই দুই কেন্দ্রে ভোট থাকলেও হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে দুই কেন্দ্রে মৃত্যু হয় দুই প্রার্থীর। যার ফলে স্থগিত হয়ে যায় ভোট। কিন্তু এরপরেও ভোটের দিন ঘোষণা হলেও তা হয়ে ওঠেনি। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভোট হতে চলেছে এই দুই কেন্দ্রেও।
ইতিমধ্যে এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপিও। এই দুই কেন্দ্রে বিজেপিকে রুখে দিতে তৃণমূলের মুখ ছিল সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল, মুর্শিদাবাদের ওই দুই আসনে আগামী ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে ভোট প্রচারে যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূল নেত্রীর। কিন্তু শনিবার জানা গিয়েছে, ভোটের প্রচারে আর মুর্শিদাবাদে আসবেন না তিনি।
তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ”রাজ্য নেতৃত্ব আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ভোটের প্রচারে আসবেন না। তাই আমরা নিজেরাই প্রচারের কাজ চালাব। অবশ্যই রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মতো।”
কিন্তু কেন শেষবেলায় ভোট প্রচারে সেই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে যাচ্ছেন না মমতা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে তৃণমূলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে কাজ করেছেন সেই উন্নয়নের নিরিখে ভোট হবে। প্রত্যেক মানুষের ঘরে সরকারের উন্নয়ন পৌঁছে গিয়েছে। সেখানে এই দুই কেন্দ্রে তৃণমূলে জেতা কোনও ব্যাপার নয় বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
উল্লেখ্য রাজ্যের প্রাক্তন শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে এবারও জঙ্গিপুরে প্রার্থী করা হয়েছে। সামসেরগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য সদ্য বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত প্রত্যেক বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামে পাওয়া চোট নিয়ে হুইল চেয়ারে বসে একের পর এক জায়গাততে প্রচারে ঝড়ে তুলেছিলেন। যদিও শেষের দিকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কিছুটা হলেও সভা, মিটিংয়ে রাশ টানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সেদিকে তাকিয়ে এবারও সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা। বলে রাখা প্রয়োজন নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ভোটের প্রচারে কোনও রকম জনসমাগম করা চলবে না। বড় প্রচার সমাবেশ কিংবা মিছিলের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নেত্রী মনে করছেন, তিনি সভা করছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে উপচে পড়বে ভিড়। অন্তত এমনটাই বলছে অতীত অভিজ্ঞতা। এতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। আর সেই কারনে এই দুই কেন্দ্রে প্রচারে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত মমতার।