দীঘায় প্রবল জলোচ্ছাস, আজও নিম্নচাপের ভ্রুকুটি দক্ষিণবঙ্গে
বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপের প্রভাবে রবিবার সকাল থেকেই উত্তাল সুমদ্র। বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে রাজ্যের উপকূল অঞ্চলে। দীঘা ও বকখালিতে সপ্তাহান্তের ছুটি কাটাতে যাওয়া লোকজনের ভিড় ছিল ভালোই। তাই এসব জায়গায় সকাল থেকেই সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল প্রশাসন। সমুদ্রস্নানে নামা পর্যটকদের উপর নজরদারি চালাতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মীও নিয়োগ করা হয় এসব এলাকায়। সারাক্ষণ পর্যটকদের সতর্ক রাখতে সিভিল ডিফেন্সের স্বেচ্ছাসেবকরা লাগাতার মাইকিং যেমন করেছেন, তেমনই প্রয়োজনে জলে নেমে অতি উৎসাহী পর্যটককে পাড়ে তুলেও এনেছেন। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ, সোমবারও নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ও রাজ্যের উপকূলবর্তী অংশে। কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গেই ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উপকূল অঞ্চলে একইভাবে জারি রয়েছে হলুদ সতর্কতা। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞাও বহাল রয়েছে। আজও সমুদ্র একইরকম উত্তাল থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দীঘায় এদিন সকালের দিকে পর্যটকদের স্নান অবশ্য বিঘ্নিত হয়নি। দুপুরে জোয়ারের সময় শুরু হয় প্রবল জলোচ্ছ্বাস। পাড়ের গার্ডওয়াল টপকে মেরিন ড্রাইভের রাস্তায় ঢেউ আছড়ে পড়ে। তবে উপকূলজুড়ে ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিপাত ছিল সকাল থেকেই। বিকেলে বৃষ্টির দাপট বাড়ে। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপক অফিসার মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ১৪ তারিখ পর্যন্ত নিম্নচাপের রেশ থাকবে। তাতে সমুদ্র উত্তাল হবে। সেইমতো সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
|
বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, হেনরিজ আইল্যান্ড, মৌসুনি দ্বীপে পরিস্থিতি ছিল দীঘার মতোই। শনিবার রাত থেকে এসব এলাকায় সতর্কতামূলক প্রচার শুরু করে দিয়েছিল নামখানা ব্লক প্রশাসন। বকখালিতেও এদিন জোয়ারের সময় জলোচ্ছ্বাস ছিল ভালোই। সমুদ্রে নামতে পর্যটকদের নিষেধ করে প্রশাসন। সমুদ্রতটে নজরদারি বাড়াতে এদিন ২৩ জন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীকে নামানো হয়েছিল। বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর বলেন, ‘অন্যান্য সময়ে পুরো সমুদ্রতটে ছ’জন সিভিল ডিফেন্সের কর্মী মোতায়েন থাকেন। দুর্যোগের কারণে বাড়তি কর্মী নামানো হয়েছিল। কাউকে সমুদ্রে নামতে দেখলেই বাঁশি বাজিয়ে তাঁকে পাড়ে ফেরত এনেছেন এই কর্মীরা।’
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে আজ কলকাতায় পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় ভালো বৃষ্টি হতে পারে। কলকাতায়ও বৃষ্টি হবে অল্পবিস্তর। পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া ওড়িশা উপকূল দিয়ে নিম্নচাপটি এলে দীঘা সহ রাজ্যের উপকূলে আরও কিছুটা বেশি প্রভাব পড়ত। নিম্নচাপটির গতিপথ পারাদ্বীপের দিকে সরে যাওয়ায় সেই প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।